Translate

Massage for you

Allah is my lord

রবিবার, ২৯ মে, ২০১৬

ঈমান বিধ্বংসী বাতিল আকীদাঃ


ঈমান বিধ্বংসী বাতিল আকীদাঃ মেরাজের নব্বই হাজার কালাম।
হাফেজ মোঃ মিনহাজ উদ্দীন
-------------------------
মেরাজ রজনীতে রাসূলুল্লাহ সাঃ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে নব্বই হাজার কালাম ও বাণী লাভ করেছিলেন। তাম মধ্যে ত্রিশ হাজার কালাম যাহেরী, যেগুলো উলামায়ে কেরাম জানেন। আর অবশিষ্ট ষাট হাজার কালাম বাতেনী, যেগুলো রাসূল সাঃ গোপনে একমাত্র হযরত আলী রাঃ কে বলে গেছেন।
তাঁর নিকট থেকে সিনা পরস্পরায় পরবর্তী সুফী, ফকীর ও দরবেশদের নিকট গচ্ছিত। বাতেনী এই ষাট হাজার কালাম উলামায়ে কেরাম না-জানার কারণে তারা ফকীর-দরবেশদের মধ্যে একটা কিছু দেখলেই তাদের ওপর আপত্তি করে বসে।
এ কথা জাল ও ভিত্তিহীন। কেননা প্রথমত এতে আল্লাহ তায়ালার ব্যাপারে এই মিথ্যা ও ভ্রান্ত বিশ্বাস পোষণ করা হয় যে, তিনি মানুষকে দুপ্রকার শরীয়ত প্রদান করেছেন। একটি ত্রিশ হাজার কালামবিশিষ্ট শরীয়ত, আরেকটি ষাট হাজারবিশিষ্ট শরীয়ত এবং উভয় শরীয়ত পরস্পর বিরোধী। এক শরীয়তে একটি বস্তু হালাল হলে অন্য শরীয়তে সে একই বস্তু হারাম। এরূপ পরস্পর বিরোধপূর্ণ কাজ কোন সৃষ্টির পক্ষেও নিকৃষ্ট, অথচ এটাকে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালার শানে চালিয়ে দিয়েছে এসব দাজ্জালরা।
দ্বিতীয়ত এখানে রাসূল সা: এর উপরও এই অপবাদ আসে যে, তিনি দ্বীনের অধিকাংশ মৌলিক কথা, যা সর্বস্তরের মুসলমানদের জানা জরুরি ছিল, তা তাদের কাছে পৌছাননি। একজনকে গোপনে বলে গেছেন আর অন্যদেরকে বলে গেছেন তার বিপরীত কথা। রাসূল সা: সম্পর্কে যে ব্যক্তির এরূপ দারনা থাকবে, তার যে রাসূল সা: এর প্রতি ঈমান নেই, তা তো বলাই বাহুল্য।
তৃতীয়ত রাসূল সা: হযরত আলী রা: কে দ্বীনের বিশেষ বিশেষ এমন অনেক কথা পৌছিয়েছেন, যা অন্যদেরকে পৌছাননি- এ আকীদা মূলত সাবাঈ চক্রের ছিল ( যাদের কাফের হওয়ার ব্যাপারে উম্মত একমত) সবাই চক্র এ আকীদা হযরত আলী রা: এর যুগেই রটিয়েছিল। আর হযরত আলী রা: সুষ্পষ্ট ভাষায় তা অস্বীকার করেছেন। এ সম্পর্কে একাধিক সহীহ রেওয়ায়েত রয়েছে। দেখুন একটি হাদিস- ‘ আমের ইবনে ওয়াসেলা বলেন, এক ব্যক্তি হযরত আলী রা: কে জিজ্ঞাসা করল, রাসূল সা: কি লোকের অগোচরে আপনাকে গোপনে কিছু বলে গেছেন?  এ কথা শুনে ক্রোধে হযরত আলী রা: এর মুখমণ্ডল লাল হয়ে গেল। তিনি বলেন, রাসূল সা: লোকের অগোচরে আমাকে কিছু বলে যাননি। তবে আমাকে তিনি চারটি কথা বলে গেছেন, তখন আমরা ছিলাম ঘরের ভেতর। তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি তার পিতাকে লানত করে, আল্লাহ তায়ালা তাকে লানত করেন। যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহ তথা আল্লাহ্ তায়ালা ছাড়া অন্য কারও নামে জবাই করে, আল্লাহ্ তায়ালা তার উপর লানত করেন। যে ব্যক্তি কো বিদআতিকে আশ্রয় দেয়, আল্লাহ তায়ালা তার ওপর লানত করেন। যে ব্যক্তি যমীর চিহৃ ( সীমানা) এদিক-সেদিক করে, আল্লাহ তায়ালা তার ওপর লানত করেন। ( সুনানে নাসায়ী 2/183-184, হাদিস 4422
লেখক: www.facebook.com/hafej.minhaz.1

শুক্রবার, ২০ মে, ২০১৬

ঈমান বিধ্বংসী বাতিল আকীদাঃ মেরাজের নব্বই হাজার কালাম।


 ঈমান বিধ্বংসী বাতিল আকীদা, মেরাজের নব্বই হাজার কালাম। 
 
মেরাজ রজনীতে রাসূলুল্লাহ সাঃ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে নব্বই হাজার কালাম ও বাণী লাভ করেছিলেন। তাম মধ্যে ত্রিশ হাজার কালাম যাহেরী, যেগুলো উলামায়ে কেরাম জানেন। আর অবশিষ্ট ষাট হাজার কালাম বাতেনী, যেগুলো রাসূল সাঃ গোপনে একমাত্র হযরত আলী রাঃ কে বলে গেছেন।
তাঁর নিকট থেকে সিনা পরস্পরায় পরবর্তী সুফী, ফকীর ও দরবেশদের নিকট গচ্ছিত। বাতেনী এই ষাট হাজার কালাম উলামায়ে কেরাম না-জানার কারণে তারা ফকীর-দরবেশদের মধ্যে একটা কিছু দেখলেই তাদের ওপর আপত্তি করে বসে।
এ কথা জাল ও ভিত্তিহীন। কেননা প্রথমত এতে আল্লাহ তায়ালার ব্যাপারে এই মিথ্যা ও ভ্রান্ত বিশ্বাস পোষণ করা হয় যে, তিনি মানুষকে দুপ্রকার শরীয়ত প্রদান করেছেন। একটি ত্রিশ হাজার কালামবিশিষ্ট শরীয়ত, আরেকটি ষাট হাজারবিশিষ্ট শরীয়ত এবং উভয় শরীয়ত পরস্পর বিরোধী। এক শরীয়তে একটি বস্তু হালাল হলে অন্য শরীয়তে সে একই বস্তু হারাম। এরূপ পরস্পর বিরোধপূর্ণ কাজ কোন সৃষ্টির পক্ষেও নিকৃষ্ট, অথচ এটাকে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালার শানে চালিয়ে দিয়েছে এসব দাজ্জালরা।
দ্বিতীয়ত এখানে রাসূল সা: এর উপরও এই অপবাদ আসে যে, তিনি দ্বীনের অধিকাংশ মৌলিক কথা, যা সর্বস্তরের মুসলমানদের জানা জরুরি ছিল, তা তাদের কাছে পৌছাননি। একজনকে গোপনে বলে গেছেন আর অন্যদেরকে বলে গেছেন তার বিপরীত কথা। রাসূল সা: সম্পর্কে যে ব্যক্তির এরূপ দারনা থাকবে, তার যে রাসূল সা: এর প্রতি ঈমান নেই, তা তো বলাই বাহুল্য।
তৃতীয়ত রাসূল সা: হযরত আলী রা: কে দ্বীনের বিশেষ বিশেষ এমন অনেক কথা পৌছিয়েছেন, যা অন্যদেরকে পৌছাননি- এ আকীদা মূলত সাবাঈ চক্রের ছিল ( যাদের কাফের হওয়ার ব্যাপারে উম্মত একমত) সবাই চক্র এ আকীদা হযরত আলী রা: এর যুগেই রটিয়েছিল। আর হযরত আলী রা: সুষ্পষ্ট ভাষায় তা অস্বীকার করেছেন। এ সম্পর্কে একাধিক সহীহ রেওয়ায়েত রয়েছে। দেখুন একটি হাদিস- ‘ আমের ইবনে ওয়াসেলা বলেন, এক ব্যক্তি হযরত আলী রা: কে জিজ্ঞাসা করল, রাসূল সা: কি লোকের অগোচরে আপনাকে গোপনে কিছু বলে গেছেন?  এ কথা শুনে ক্রোধে হযরত আলী রা: এর মুখমণ্ডল লাল হয়ে গেল। তিনি বলেন, রাসূল সা: লোকের অগোচরে আমাকে কিছু বলে যাননি। তবে আমাকে তিনি চারটি কথা বলে গেছেন, তখন আমরা ছিলাম ঘরের ভেতর। তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি তার পিতাকে লানত করে, আল্লাহ তায়ালা তাকে লানত করেন। যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহ তথা আল্লাহ্ তায়ালা ছাড়া অন্য কারও নামে জবাই করে, আল্লাহ্ তায়ালা তার উপর লানত করেন। যে ব্যক্তি কো বিদআতিকে আশ্রয় দেয়, আল্লাহ তায়ালা তার ওপর লানত করেন। যে ব্যক্তি যমীর চিহৃ ( সীমানা) এদিক-সেদিক করে, আল্লাহ তায়ালা তার ওপর লানত করেন। ( সুনানে নাসায়ী 2/183-184, হাদিস 4422
লেখক: www.facebook.com/hafej.minhaz.1

মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০১৬

কবিতা

সংগ্রামী মানুষের সাথে রেখো প্রভু
www.jsmadrasa.com
 
সেই সংগ্রামী মানুষের সারিতে
আমাকেও রাখিও রহমান
যারা কোরানের আহবানে নির্ভিক
নির্ভয়ে সব করে দান।।
তোমারই রঙ্গে যারা রঙ্গিন
তোমারই ডাকে ধরে সঙ্গীন
যারা সকল শক্তি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে
মিথ্যার করে অবসান।।
ফুলেল মানুষ করে ঘ্রানে উজালা
প্রানে ভালোবাসা আর সৌরভ
আকাশ সমান বুকে উদার সাহস
নিজেকে বিলিয়ে তার উৎসব।।
শাহাদাতে চলে শত ব্যথা ভুলে
তোমার প্রেমের ফুল হৃদয়ে তুলে
আছে সেই আলোময় ফুলের পথে
বিজয়ের পূত উদ্যান।।

সোমবার, ৯ মে, ২০১৬

ইসলামে নারীর যৌন অধিকার


ইসলামে কি পুরুষকে স্ত্রীর ওপরযথেচ্ছ যৌনাচারের ফ্রি লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে?
স্ত্রীরা তোমাদের শস্যক্ষেত্র – কেন এই আয়াত?
ইসলামে কি নারীদের যৌন চাহিদারকোন স্বীকৃতি নেই?
ইসলামে কি যৌন অধিকার একতরফাভাবে পুরুষকে দেওয়া হয়েছে?]
ভূমিকা
ইসলামের সমালোচকরা অনেকে বুঝাতে চান যে ইসলামে নারীদের যৌন চাহিদার কোন মূল্য নাই, বরংএই ব্যাপারে পুরুষকে একতরফা অধিকার দেওয়া হয়েছে, পুরুষ যখন ইচ্ছা তখন যৌন চাহিদা পূরণ করবে আর স্ত্রী সেই চাহিদা পূরণের জন্য সদা প্রস্তুত থাকবে। এই ধারণার পেছনে কুরআন আয়াত এবং হাদিসের অসম্পূর্ণ পাঠের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। বস্তুত কুরআনের কিছু আয়াত বা কিছু হাদিস দেখে কোন বিষয় সম্পর্কে ইসলামের শিক্ষাকে পুরোপুরি উপলব্ধি করা সম্ভব নয়, বরং তা অনেক ক্ষেত্রেই পাঠককে বিভ্রান্ত করতে পারে। কোন বিষয় সম্পর্কে ইসলামের শিক্ষাকে সঠিকভাবে উপলদ্ধি করতে হলে সেই সংক্রান্ত কুরআনের সবগুলো আয়াত এবং সবগুলো হাদিসকে সামনে রাখতে হবে। যা হোক, আমার এই লেখার উদ্দেশ্য শুধু এতটুকু দেখানো ইসলামে নারীদের যৌন চাহিদার কোন স্বীকৃতি আছে কি-না। আসুন চলে যাই মূল আলোচনায়।
পরিচ্ছেদ ১
কেন এই দাবি?
সূরা বাকারার ২২৩ নম্বর আয়াতেবলা হয়েছে-
أَنَّىشِئْتُمْنِسَآؤُكُمْحَرْثٌلَّكُمْفَأْتُواْحَرْثَكُمْ
Your wives are a tilth for you, so go to your tilth, when or how you will
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর।
হঠাৎ করে এই আয়াতাংশ কারো সামনে পেশ করা হলে মনে হতে পারেযে এখানে পুরুষকে যখন ইচ্ছা তখন তার স্ত্রীর সাথে যৌনাচার অবাধ অনুমতি দেওয়া হচ্ছে- এমনকি স্ত্রীর সুবিধা-অসুবিধার দিকেও তাকানোর কোন প্রয়োজন যেন নেই। যারা এই ধরণের ধারণার প্রচারণা চালান তারা সাধারণত এই আয়াতটি উল্লেখ করার পর তাদের ধারণার সাপোর্টে কিছু হাদিসও পেশ করেন,যেমন-
কোন স্ত্রী যদি তার স্বামীর বিছানা পরিহার করে রাত কাটায় তবে ফেরেশতারা সকাল পর্যন্ত তাকে অভিশাপ দিতে থাকে। (মুসলিম, হাদিসের ইংরেজি অনুবাদ-৩৩৬৬)
উপরিউক্ত আয়াতাংশ এবং এই ধরণের কিছু হাদিস পেশ করে অনেকই এটা প্রমাণ করতে চান ইসলাম কেবল পুরুষের যৌন অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করেছে এবং নারীকে যৌন মেশিন হিসেবে যখন তখন ব্যবহারের ফ্রি লাইসেন্স দিয়ে রেখেছে।সোজা কথায় ইসলামে যৌন অধিকার যেন একতরফাভাবে পুরুষের! আসলেই কি তাই?
পরিচ্ছেদ ২
২.১ কুসংস্কারের মূলোচ্ছেদকারি কুরআনের ২:২২৩ আয়াত সংক্রান্ত বিভ্রান্তির নিরসন
মদিনার ইহুদিদের মধ্যে একটা কুসংস্কার এই ছিল যে, কেউ যদি তার স্ত্রীর সাথে পেছন দিক থেকে যোনিপথে সঙ্গম করত তবে বিশ্বাস করা হতো যে এর ফলে ট্যারা চোখবিশিষ্ট সন্তানের জন্ম হবে। মদিনার আনসাররা ইসলামপূর্ব যুগে ইহুদিদের দ্বারা যথেষ্ট প্রভাবিত ছিল। ফলে আনসারগণও এই কুসংস্কারে আচ্ছন্ন ছিলেন। মক্কাবাসিদের ভেতর এই কুসংস্কার ছিল না। মক্কার মুহাজিররা হিজরত করে মদিনায় আসার পর, জনৈক মুহাজির যখন তার আনসার স্ত্রীর সাথে পেছন দিক থেকে সঙ্গম করতে গেলেন, তখন এক বিপত্তি দেখা দিল। আনসার স্ত্রী এই পদ্ধতিকেভুল মনে করে জানিয়ে দিলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অনুমতি ব্যতিত এই কাজ তিনি কিছুতেই করবেন না। ফলে ঘটনাটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত পৌঁছে গেল। এ প্রসঙ্গেই কুরআনের আয়াত (২:২২৩) নাযিল হয়, যেখানে বুঝানো হচ্ছে- সামনে বা পেছনে যেদিক দিয়েই যোনিপথে গমন করা হোক না কেন, তাতে কোন সমস্যা নেই। শস্যক্ষেত্রে যেদিক দিয়ে বা যেভাবেই গমন করা হোক না কেন তাতে শস্য উত্পাদনে যেমন কোন সমস্যা হয় না, তেমনি স্বামী তার স্ত্রীর যোনিপথে যেদিক দিয়েই গমন করুক না কেন তাতে সন্তান উত্পাদনে কোন সমস্যা হয় না এবং এর সাথে ট্যারা চোখবিশিষ্ট সন্তান হবার কোন সম্পর্ক নেই। বিস্তারিত তাফসিরপড়ে দেখতে পারেন। আরেকটা বিষয় হচ্ছে পায়ুপথে গমন (Anal Sex) করা হারাম। বিস্তারিত এই লিংক ক্লিক করুন।
কাজেই এই আয়াতের উদ্দেশ্য ইহুদিদের প্রচারিত একটি কুসংস্কারের মূলোত্পাটন, স্ত্রীর সুবিধা অসুবিধার প্রতিলক্ষ না রেখে যখন তখন অবাধ যৌনাচারের অনুমোদন নয়। যারা মনে করেন কুরআনে ইহুদি খৃষ্টানদের কিতাব থেকে ধার করাহয়েছে বা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইহুদি খৃষ্টানদের থেকে শুনে শুনে কুরআন রচনা করেছেন, এই আয়াত তাদের জন্য বেশ অস্বস্তিকর বটে! প্রকৃত মুক্তচিন্তার অধিকারীদের বরং এই আয়াতের প্রশংসা করার কথা ছিল, কিন্তু প্রশাংসার যোগ্য আয়াতটিকে সমালোচনার লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে।
২.২ ফেরেশতাদের অভিশাপ সংক্রান্ত হাদিসটির বিশ্লেষণ
এবার ফেরেশতাদের অভিশাপ করা সংক্রান্ত ওপরের হাদিসটার কথায় আসি। এই হাদিসটা বুখারিতেও এসেছে আরেকটু পূর্ণরূপে এভাবে:যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে বিছানায় ডাকে (যেমন- সঙ্গম করার জন্য), আর সে প্রত্যাখান করে ও তাকে রাগান্বিত অবস্থায়ঘুমাতে বাধ্য করে, ফেরেশতারা সকাল পর্যন্ত তাকে অভিশাপ করতেথাকে। [বুখারি, ইংরেজি অনুবাদ ভলি- ৪/বুক-৫৪/৪৬০]
একটু ভালো করে লক্ষ্য করুন,
স্ত্রী স্বামীর ডাকে সাড়া না দেওয়ায় স্বামী রাগান্বিত হয়ে কী করছে?
স্ত্রীর ওপর জোর-জবরদস্তি করে নিজের যৌন অধিকার আদায় করে নিচ্ছে?
নাকি ঘুমিয়ে পড়েছে?
এই হাদিসে নারী কর্তৃক স্বামীরডাকে সাড়া না দেওয়ার কারণে স্ত্রীর সমালোচনা করা হলেও পুরুষকে কিন্তু জোর-জবরদস্তি করে নিজ অধিকার আদায়ে উত্সাহিত করা হচ্ছে না। আবার স্ত্রী যদি অসুস্থতা বা অন্য কোন সঙ্গত ওজরের কারণে যৌনাচারহতে বিরত থাকতে চান, তবে তিনি কিছুতেই এই সমালোচনার যোগ্য হবেন না, কেননা ইসলামের একটি সর্বস্বীকৃত নীতি হচ্ছে:
আল্লাহপাক কারো ওপর তার সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা চাপান না।
আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না [২:২৮৬]
আমি কাউকে তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব অর্পন করি না। [২৩:৬২]
২.৩ ইসলাম কি শুধু নারীকেই সতর্ক করেছে?
এটা ঠিক যে ইসলাম স্ত্রীদেরকে স্বামীর যৌন চাহিদার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছে, কিন্তু স্বামীকে নিজ চাহিদা আদায়ের ব্যাপারে উগ্র হবার কোন অনুমতিযেমন দেয়নি তেমনি স্বামীকেও স্ত্রীর যৌন চাহিদার প্রতি যত্মবান হবার নির্দেশ দিয়েছে।ইসলাম স্ত্রীকে বলেছে যদি রান্নরত অবস্থায়ও স্বামী যৌন প্রয়োজনে ডাকে তবে সে যেন সাড়া দেয়, অন্য দিকে পুরুষকে বলেছে সে যেন তার স্ত্রীর সাথে ভালো আচরণ করে, স্ত্রীর কাছে ভালো সাব্যস্ত না হলে সে কিছুতেই পূর্ণ ঈমানদার বা ভালোলোক হতে পারবে না। এই কথা জানারপরও কোন পুরুষ কি স্ত্রীর সুবিধার প্রতি কোনরূপ লক্ষ না রেখেই যখন তখন তাকে যৌন প্রয়োজনে ডাকবে? ইসলাম পুরুষকে এব্যাপারেও সাবধান করেদিয়েছে যে নিজের যৌন চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে স্ত্রীর যৌন চাহিদার কথাকে সে যেন ভুলে না যায়। অনেকে হয়ত ভাবছেন, কী সবকথা বলছি, কোথায় আছে এসব?
চলুন সামনে এগিয়ে দেখি।
পরিচ্ছেদ ৩
৩.১ ইসলামে স্ত্রীর সাথে সদাচরণের গুরুত্ব
নিচের হাদিসগুলো একটু ভালো করেলক্ষ করুন:
হাদিস-১
আবুহুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ঈমানওয়ালাদের মধ্যে পরিপূর্ণ মুমিন সেই ব্যক্তি, যার আচার-আচরণ উত্তম। আর তোমাদের মাঝে তারাই উত্তম যারা আচার-আচরণে তাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম। [তিরমিযি, হাদিস নং১০৭৯]
হাদিস-২
আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মুমিন মু’মিনা(স্ত্রী)র প্রতি বিদ্বেষ রাখবে না। যদি তার একটি অভ্যাস অপছন্দনীয় হয় তবে আরেকটি অভ্যাস তো পছন্দনীয় হবে। [মুসলিম হাদিস নং- ১৪৬৯, ২৬৭২]
হাদিস-৩
আয়িশা (রা.) হতে বর্ণিত:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ঈমানওয়ালাদের মধ্যে পরিপূর্ণ মুমিন সেই ব্যক্তি যার আচার-আচরণ উত্তম এবং নিজ পরিবারের জন্য অনুগ্রহশীল। [তিরমিযি, হাদিস নং- ২৫৫৫]
৩.১.১ তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি, ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে:
৩.১.১.১ মু’মিন পুরুষ তার মু’মিনাস্ত্রীর প্রতি বিদ্বেষ রাখতে পারবে না।
৩.১.১.২ সদাচারী এবং স্ত্রী-পরিবারের প্রতি কোমল, নম্র, অনুগ্রহশীল হওয়া ঈমানের পূর্ণতার শর্ত।
৩.১.১.৩ কোন পুরুষ যদি উত্তম হতেচায় তাকে অবশ্যই তার স্ত্রীর কাছে উত্তম হতে হবে।একজন মুসলিমের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় সেটা হচ্ছে তার ঈমান- যে ঈমানের জন্যসে নিজের প্রাণ বিসর্জন করতেও কুন্ঠিত হয় না- সেই ঈমানের পরিপূর্ণতার জন্য স্ত্রীর সাথেসদাচারী, নমনীয় এবং অনুগ্রহশীল হওয়া ছাড়া উপায় নেই। কোন মুসলিম উত্তম বলে বিবেচিত হতেই পারবে না যদি না স্ত্রীর সাথে তার আচার-আচরণ উত্তম হয়।
৩.১.২ এখন প্রশ্ন হলো-
৩.১.২.১ যে স্বামী তার স্ত্রীর যৌন চাহিদার প্রতি কোন লক্ষ্য রাখে না, সে কি তার স্ত্রীর কাছে উত্তম হতে পারে?
৩.১.২.২ অথবা যে স্বামী তার স্ত্রীর সুবিধা অসুবিধার প্রতিলক্ষ্য না রেখে যখন তখন তার স্ত্রীর সাথে যৌনকার্যে লিপ্ত হয় সে কি তার স্ত্রীর কাছে উত্তম হতে পারে?
৩.১.৩ উত্তর হচ্ছে, পারে না। একজন ভালো মুসলিম যেমন স্ত্রীরজৈবিক চাহিদার প্রতি যত্নবান হবে, তেমনি নিজের জৈবিক চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে এমন অবস্থার সৃষ্টিও করবে না যা তার স্ত্রীর জন্য কষ্টকর হয়। স্ত্রীর প্রতি অসদাচরণ করে কেউতার স্ত্রীর কাছে ভালো হতে পারে না আর পরিপূর্ণ মু’মিনও হতে পারে না।
৩.২ ইসলামে স্ত্রীর যৌন চাহিদার প্রতি গুরত্ব
ইসলাম নারীর যৌন অধিকারকে শুধুস্বীকৃতিই দেয় না বরং এ ব্যাপারে কতটুকু সচেতন নিচের হাদিসটি তার একটি প্রকৃষ্ট প্রমাণ।
আনাস বিন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত:
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যখন পুরুষ তারস্ত্রীর সাথে সহবাস করে তখন সে যেন পরিপূর্ণভাবে (সহবাস) করে। আর তার যখন চাহিদা পূরণ হয়ে যায় (শুক্রস্খলন হয়) অথচ স্ত্রীর চাহিদা অপূর্ণ থাকে, তখন সে যেন তাড়াহুড়া না করে। [মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস নং-১০৪৬৮]
কী বলা হচ্ছে এখানে? সহবাসকালেপুরুষ তার নিজের যৌন চাহিদা পুরো হওয়া মাত্রই যেন উঠে না যায়, স্ত্রীর যৌন চাহিদা পূরণ হওয়া পর্যন্ত যেন বিলম্ব করে।এরকম একটা হাদিস চোখ দিয়ে দেখার পরও কারো জন্য এমন দাবি করা কি ঠিক হবে যে ইসলামে নারীদের যৌন চাহিদার কোন স্বীকৃতি নেই!
এসব তো গেল উপদেশ। কিন্তু বাস্তবে কেউ যদি এসব উপদেশ অনুসরণ না করে তাহলে এই ধরণের পুরুষদের সতর্ক করা তার অভিভাবক এবং বন্ধুদের যেমন দায়িত্ব তেমনিস্ত্রীরাও তাদের স্বামিদের বিরূদ্ধে ইসলামি রাষ্ট্রের কাছে নালিশ করার অধিকার রাখে। এধরণের কিছুঘটনা পরিচ্ছেদ চারে আসছে।
এছাড়া সঙ্গমকালে স্ত্রীকে যৌনভাবে উত্তেজিত না করে সঙ্গমকরাকে ইসলামে নিষেধ করা হয়েছে। কেননা তাতে স্বামীর চাহিদা পূরণ হলেও স্ত্রীর চাহিদা পূরণ হয় না এবং স্ত্রীর জন্য তা কষ্টকর হয়। পরিচ্ছেদ পাঁচে এই ব্যাপারে আলোকপাত করা হবে।
পরিচ্ছেদ ৪
এই পরিচ্ছেদে আমরা কিছু দৃষ্টান্তমূলক ঘটনা নিয়ে আলোচনা করবো যেখানে স্ত্রীর যৌন অধিকারের প্রতি অবহেলা করার কারণে স্বামীকে সতর্ক করাহয়েছে, এমনকি স্বামীর বিরূদ্ধে ইসলামি শাসকের কাছে নালিশ পর্যন্ত করা হয়েছে।

পরিচ্ছেদ ৫
ইসলামে শৃঙ্গারের গুরুত্ব
ইসলাম সঙ্গমের পূর্বে স্ত্রীর সাথে অন্তরঙ্গতা সৃষ্টি বা শৃঙ্গার করার প্রতি যথেষ্ঠ গুরুত্ব আরোপ করে। স্ত্রীর যৌনাঙ্গকে সঙ্গমের জন্য প্রস্তুত না করেই তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়াকে- যা স্ত্রীর জন্য অত্যন্ত কষ্টকর- ইসলামে ‘পশুর ন্যায় সঙ্গম করা’ বলে অভিহিত করা হয়েছে এবং সঙ্গমেরআগে শৃঙ্গার এবং আবেগপূর্ণ চুম্বন করাকে সুন্নাতে মু্‌ওয়াক্কাদাহ বলা হয়েছে। এই পরিচ্ছদে জনৈক মহিলা প্রশ্নের প্রেক্ষিতে দারুল-ইফতা, Leicester, UK থেকে প্রদানকৃত একটি ফতোয়ার অংশ বিশেষ উদ্ধৃত করবো যাতে ইসলামেশৃঙ্গারের গুরুত্ব সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হবে:
ইমাম দাইলামি(রহ.) আনাস বিন মালিক(রা.) এর বরাতে একটি হাদিসলিপিবদ্ধ করেছেন যে রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করা হয়েছে যে, “কেউ যেনপশুর মতো তার স্ত্রী হতে নিজের যৌন চাহিদাকে পূরণ না করে, বরং তাদের মধ্যে চুম্বন এবং কথাবার্তার দ্বারা শৃঙ্গার হওয়া উচিত।” (দাইলামি’র মুসনাদ আল-ফিরদাউস, ২/৫৫)
ইমাম ইবনুল কাউয়্যিম(রহ.) তাঁরবিখ্যাত ‘তিব্বে নববী’তে উল্লেখকরেছেন যে রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শৃঙ্গার করার আগে সঙ্গম করতে নিষেধ করেছেন।(দেখুন: ‘তিব্বে নববী’, ১৮৩, জাবির বিন আবদুল্লাহ হতে)
আল্লামা আল-মুনাবি(রহ.) বলেন:
“সঙ্গমের আগে শৃঙ্গার এবং আবেগপূর্ণ চুম্বন করা সুন্নাতেমু্‌ওয়াক্কাদাহ এবং এর অন্যথাকরা মাকরূহ।” (ফাইজ আল-ক্বাদির,৫/১১৫, দ্রষ্টব্য: হাদিস নং ৬৫৩৬) [সূত্র]
শেষের কথা:
শুরুতেই বলেছিলাম, আমার এই লেখার উদ্দেশ্য শুধু এতটুকু দেখানো ইসলামে নারীদের যৌন চাহিদার কোন স্বীকৃতি আছে কি-না। কাজেই ইচ্ছা করেই কুরআন এবং হাদিসের উল্লেখযোগ্য অনেক কিছুই এখানে যোগ করি নাই। কিন্তু যতটুকু উল্লেখ করেছি তাজানবার পরও ‘ইসলামে নারীদের যৌনচাহিদার কোন মূল্য নেই’, ‘ইসলামেপুরুষকে স্ত্রীর ওপর যথেচ্ছ যৌনাচারের ফ্রি লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে’, ‘ইসলামে যৌন অধিকার একতরফাভাবে পুরুষকে দেওয়া হয়েছে’ এই জাতীয় অভিযোগ সুস্থবুদ্ধিসম্পন্ন কেউ আশা করি করবেন না।

ইভটিজিং ঠেকাতে শরয়ী পর্দার বিকল্প নেই

মানুষের ইজ্জত খুবই মূল্যবান। যা টাকা-পয়সার বিনিময়ে অর্জন করা যায় না। আবার তা অর্জন করা যেমন তেমন,
ধরে রাখা খুবই কঠিন। একবার চলে গেলে তা আর ফিরে পাওয়া যায় না। সমাজের দৃষ্টিতে কারো গায়ে কলংকের
দাগ লেগে গেলে, তা আর মুছার মত নয়। সুস্থ মস্তিস্কের অধিকারী মানব সভ্যতা উলঙ্গ থাকতে পারে না। অন্যথায় বুঝতে হবে – সেই মানুষটা পাগল ছাড়া কিছুই নয়। কারণ,
পাগলের কোন লজ্জা-শরমের অনুভূতি।
আর মানুষের লজ্জাশরম হিফাজত রাখাও ইজ্জত-সম্মানের অন্তর্ভূক্ত।
এ জন্য আল্লাহ
তা‘আলা মানুষকে আব্রু
রক্ষার্থে পোশাক দিয়েছেন। আল্লাহ
তা‘আলা বলেন, “হে বনী আদম!
আমি তোমাদের জন্য পোশাক অবতীর্ণ
করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত
করে এবং অবতীর্ণ করেছি সাজ-
সজ্জার বস্ত্র। আর পরহেযগারীর
পোশাক – এটি সর্বোত্তম।
এটা আল্লাহর কুদরতের অন্যতম
নির্দশন, যাতে তারা চিন্তা-
ভাবনা করে।” (সূরাহ আ‘রাফ, আয়াত :
২৬)
তাই আমরা মানুষরা লজ্জাস্থান আবৃত
করে ইজ্জত-সম্মান বাঁচানোর জন্য
আল্লাহ প্রদত্ত পোশাক ব্যবহার
করে থাকি। পুরুষ যারা আছে, তাদের
লজ্জাস্থানের সীমানা হলো – নাভীর
নিচ থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঢেকে রাখা।
তেমনি নারীদের জন্যও লজ্জাস্থান
হিফাজতের হুকুম রয়েছে। বিধান
অনুযায়ী তাদের লজ্জাস্থানের
সীমানা হলো – তাদের আপাদমস্তক
সমস্ত শরীর। তাই নারীদের হিজাব
পড়ে বেগানা পুরুষ থেকে তাদের সমস্ত
শরীর ঢেকে রাখা কর্তব্য।
নারীরা এ বিধান পালনে বাইরে বের
হওয়ার জন্য বোরকা দ্বারা শরীর
আবৃত করে। কিন্তু দুঃখের বিষয়,
অনেকে তা ব্যবহার করে না।
তারা মহান আল্লাহর এ
পর্দা বিধানকে উপেক্ষা করে চলে।
যারা বোরকা পরে পর্দার
আড়ালে থাকতে চায় না,
বর্তমানে তাদের কারণে বখাটে ছেলেদের
উৎপাতে মেয়েদের বিভিন্ন সমস্যায়
পড়তে হচ্ছে। আর এর কারণেই
সাম্প্রতিককালে বহুল আলোচিত বিষয়
হয়ে দাঁড়িয়ে ইভটিজিং বা নারীদের
প্রতি যৌন হয়রানি। আজকাল
“ইভটিজিং-এর প্রতিবাদে স্কুল-
কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও
অভিভাবকদের অংশগ্রহণে এক
মানববন্ধন”, “বখাটেদের উৎপাত
বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি”,
“ইভটিজিং বন্ধে গণপ্রতিরোধ
গড়ে তোলার দাবিতে গণজমায়েত”,
“সারা দেশে অব্যাহতভাবে নারীর
প্রতি অবমাননাকর আচরচণ ও
নির্যাতন বন্ধ ও আত্মহত্যার
প্ররোচনা দানকারীদের গ্রেফতার ও
বিচারের দাবি” এই নামে পত্র-
পত্রিকায়
লেখালেখি করে সারা দেশে গণজাগরণ
সৃষ্টি করলেও তা প্রতিরোধ
করা সম্ভব হচ্ছে না।
আর এই পদ্ধতিতে ফলপ্রসু কিছু হবেও
না – যদি মেয়েরা এভাবে হিজাব
বা পর্দা লংঘন করে বেপর্দা-
অর্ধোলঙ্গ হয়ে চলাফেরা করে। মহান
আল্লাহর বিধান লংঘনের পরিণতিই
যে এটা।
সুতরাং বখাটে ছেলেদের হাত
থেকে মেয়েদের বাঁচার একমাত্র পথ হল
– তাদের পুরোপুরিভাবে পর্দাবিধান
পালন করা। যদি তারা পর্দার হুকুম
পালন করে চলে,
তাহলে তারা ইভটিজিংসহ অনেক
সমস্যা থেকে বেঁচে যাবে।
নারীদেরকে পর্দার নির্দেশ
দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন
তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের
যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন
যা সাধারণত প্রকাশমান
তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য্য প্রদর্শন
না করে এবং তারা যেন তাদের জিলবাব
বক্ষদেশে দেয় আর তারা যেন তাদের
স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর
পুত্র, ভাই, ভাতিজা, ভাগিনা,
স্ত্রীলোক, অধিকারভুক্ত বাঁদী,
যৌনকামনামুক্ত পুরুষ ও বালক –
যারা নারীদের গোপন অঙ্গ
সম্পর্কে অজ্ঞ তাদের ব্যতীত
কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য্য প্রকাশ
না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-
সজ্জা প্রকাশ করার জন্য
জোরে পদচারনা না করে। হে মুমিনগণ!
তোমরা সবাই আল্লাহর নিকট
তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম
হও।” (সূরাহ নূর, আয়াত : ৩১)
সম্প্রতি নারীদের লাগামহীন চলাফেরা,
নির্লজ্জভাবে স্কীন টাইট-শর্ট
পোষাক পরিধান, উত্তেজক নৃত্য-
ক্রীড়া,
অঙ্গভঙ্গি প্রভৃতি বর্তমানে ফ্যাশন
হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর মেয়েদের এ
অশ্লীলতা ছেলেদের
চরিত্রকে অবক্ষয়গ্রস্ত করে দিচ্ছে।
হাদীসের বর্ণনা মতে,
নারীরা হচ্ছে শয়তানের ফাঁদ। যখন
তারা অর্ধনগ্ন হয়ে বাইরে বের হয়,
তখন শয়তান বখাটে যুবকদের
চোখে তাদেরকে আকর্ষণীয়
করে দেখায়। আর এতে তারা বেসামাল
হয়ে নানা অপকর্ম ঘটায়।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে – নারীদের
প্রতি যৌন হয়রানি বা ইভটিজিং-এর
প্রধান কারণই হচ্ছে নারীদের
বেপর্দা ও বেপরোয়া চলাফেরা।
এমতাবস্থায় যদি আমরা ইভটিজিং ও
বখাটেদের উৎখাতে সোচ্চার হওয়ার
সাথে সাথে আমাদের মেয়েদেরকেও
ইসলামী বিধান অনুযায়ী পর্দার
আড়ালে রাখতে পারি,
তাহলে আশা করা যায় – ইভটিজিংসহ এ
সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর সমাধান
হয়ে যাবে।
তা না করে সরকারীভাবে বিভিন্ন আইন
প্রণয়ন করা, মিছিল-
মিটিং করা এবং বিভিন্ন ধরনের
ইভটিজিংবিরোধী উদ্যোগ গ্রহণ করেও
যদি মেয়েদেরকে বেপর্দাভাবে ও
বেলাগাম ছেড়ে দেয়া হয়, তাহলে এই
ইভটিজিং কোনদিন বন্ধ হবে না।
কেননা, সুটকিমাছ হিফাজত
করে না রাখলে তো বিড়ালের আহার
হবেই। এই দুষ্ট লোভী বিড়ালের হাত
থেকে বাঁচাতে হলে সুটকি মাছকে যদি খুব
সতর্কতা সাথে হিফাজত করি,
তাহলে বিড়ালকে তাড়ানোর জন্য
আন্দোলন করতে হবে না।
বলা বাহুল্য, যদি মেয়েরা পর্দার
সাথে স্কুল-কলেজে বা যে কোন
স্থানে যাতায়াত করে,
তাহলে ইভটিজিং তো দূরের কথা,
তাদেরকে চিনতেই পারবে না বখাটেরা।
এতে সমস্যা নিমিষেই খতম হয়ে যাবে।

নারীদের মাহরাম তথা যাদের সাথে দেখা করা জায়েজ তাদের তালিকা

 যাদের সাথে দেখা করা ইসলামে জায়েজ করেছে তাদের তালিকা নিচে দেওয়া হলো।

১-বাপ, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন
ক্রমানু পুরুষগণ।
২-সহোদর ভাই, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয়
ভাই।
৩-শ্বশুর, আপন দাদা শ্বশুর ও
নানা শ্বশুর এবং তাদের উর্ধ্বতন
ক্রমানু পুরুষগণ।
৪-আপন ছেলে, ছেলের ছেলে, মেয়ের
ছেলে এবং তাদের ঔরষজাত পুত্র
সন্তান এবং কন্যা সন্তানদের স্বামী।
৫-স্বামীর অন্য স্ত্রীর গর্ভজাত পুত্র।
৬-ভাতিজা, ভাগিনা তথা সহোদর,
বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই ও বোনের
ছেলে ও তাদের অধঃস্থন কোন ছেলে।
৭-আপন চাচা অর্থাৎ বাপের সহোদর,
বৈপিত্রেয় ও বৈমাত্রেয় ভাই।
৮-আপন মামা তথা মায়ের সহোদর,
বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই।
৯-দুধ সম্পর্কীয় ছেলে, উক্ত ছেলের
ছেলে, দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের ছেলে ও
তাদের ঔরষজাত যে কোন পুত্র সন্তান
এবং দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের স্বামী।
১০-দুধ সম্পর্কীয় বাপ, চাচা, মামা,
দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু
পুরুষগণ।
১১-দুধ সম্পর্কীয় ভাই, দুধ ভাইয়ের
ছেলে, দুধ বোনের ছেলে এবং তাদের
ঔরষজাত যে কোন পুত্র সন্তান।
১২-শরীয়ত অনুমোদিত বৈধ স্বামী।
১৩-যৌন শক্তিহীন এমন বৃদ্ধ, যার
মাঝে মহিলাদের প্রতি কোন আকর্ষণ
নেই আবার মহিলাদেরও তার প্রতি কোন
আকর্ষণ নেই।
১৪-অপ্রাপ্ত বয়স্ক এমন বালক যার
মাঝে এখনো যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি হয়নি।
উপরোক্ত পুরুষগণ ছাড়া কোন মহিলার
জন্য অন্য কোন পুরুষের সাথে দেখা-
সাক্ষাৎ সম্পূর্ণ হারাম।
পুরুষের মাহরাম তথা যাদের
সামনে যাওয়া জায়েজ
১-মা।
২-দাদি।, নানী ও তাদের উর্ধ্বতন
ক্রমানু মহিলাগণ।
৩-বোন [আপন হোক বা দুধ বোন
বা বৈপিত্রেয় বা বৈমাত্রেয় হোক]।
৪-আপন মেয়ে, ছেলের মেয়ে, মেয়ের
মেয়ে, এবং তাদের গর্ভজাত যে কোন
কন্যা সন্তান ও ছেলে সন্তানদের
স্ত্রী।
৫-বিবাহিত বৈধ স্ত্রী এবং যে স্ত্রীর
সাথে দৈহিক মিলন সংঘটিত হয়েছে তার
পূর্ববর্তী বা পরবর্তী স্বামীর
কন্যা সন্তান। স্ত্রীর মা অর্থাৎ
শ্বাশুরী, দাদী শ্বাশুরী।
৬-ফুপু, তথা পিতার সহোদর বোন,
বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোন।
৭-খালা তথা মায়ের সহোদর বোন,
বৈমাত্রেয় বোন ও বৈপিত্রেয় বোন।
৮-ভাতিজি, তথা সহোদর, বৈপিত্রেয় ও
বৈমাত্রেয় ভাইয়ের মেয়ে তাদের
অধঃস্থন কন্যা সন্তান।
৯-ভাগ্নি তথা সহোদর, বৈমাত্রেয় ও
বৈপিত্রেয় বোনের মেয়ে ও তাদের
অধঃস্থন কন্যা সন্তান।
১০-দুধ সম্পর্কীয় মেয়ে, মেয়ের মেয়ে,
ছেলের মেয়ে ও তাদের অধঃস্থন যে কোন
কন্যা সন্তান ও দুধ সম্পর্কীয় ছেলের
স্ত্রী।
১১-দুধ সম্পর্কীয় মা, খালা, ফুপু, নানী,
দাদী ও তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু
মহিলাগণ।
১২-দুধ সম্পর্কীয় বোন, দুধ বোনের
মেয়ে, দুধ ভাইয়ের মেয়ে এবং তাদের
গর্ভজাত যে কোন কন্যা সন্তান।
১৩-যৌন শক্তিহীন এমন বৃদ্ধা যার
প্রতি পুরুষের কোন প্রকার আকর্ষণ
নেই।
১৪-অপ্রাপ্ত বয়স্কা এমন মেয়ে যার
প্রতি পুরুষের এখনো যৌন আকর্ষণ
সৃষ্টি হয়নি।
উপরোক্ত মহিলাগণ ছাড়া কোন পুরুষের
জন্য অন্য কোন মহিলার সাথে দেখা-
সাক্ষাৎ করা জায়েজ নয়। সম্পূর্ণ
হারাম।
দ্রষ্টব্য:
সূরা আহযাব-৫৩-৫৫
সূরা নিসা-২৩
সূরা নূর-৩০-৩১
তাফসীরে মাআরিফুল
কুরআন-২/২৫৬-৩৬১
তাফসীরে মাআরেফুল
কুরআন-৬/৪০১-৪০৫
তাফসীরে মাযহারী-২/২৫৪-২৬১ ও
৬/৪৯৭-৫০২পড়া শেষে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
মানবতার মুক্তির
লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন,
একটি অগ্নিশিখা থেকে
জ্বেলে দিন লক্ষ আলোক প্রদীপ।
http://jsmadrasa.com

আস্তে আমীন, জোরে আমীন বলার পোষ্টমর্টেম |

আস্তে আমীন, জোরে আমীন বলার পোষ্টমর্টেম |

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম,
সকল প্রশংসা ঐ মহান সত্ত্বার যিনি আমাকে এই পোষ্টটি দেওয়ার তৌফিক দান করেছেন। অসংখ্য দুরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক নাবী মুহাম্মাদ সা: এর উপর।
সত্য প্রকাশিত হোক, প্রমাণিত হোক – এটা প্রতিটি মুসলিমই চায়। কিন্তু তাই বলে নিজের মাযহাবী মতের পক্ষে হওয়ায় যঈফ হাদিসকে দলিল হিসেবে উপস্থাপন করে স্বার্থ হাসিল করা এবং মুসলিমদের সাথে প্রতারণা করায় হানাফী মাযহাবের আলিমরা সব সময়ই এগিয়ে। এজন্য তারা নোবেলও পেয়ে যেতে পারে।
আজ আমরা হানাফীদের অন্যতম মাওলানা মুহাম্মাদ ইউসুফ লুধিয়ানভী কর্তৃক লিখিত আস্তে আমীন বলার পক্ষে কিছু হাদিস দলিলের জবাব দিচ্ছি। তিনি পাঁচটি হাদিস দলিল হিসেবে দিয়েছেন।  এই দলিলগুলো হানাফী মাযহাবের মুকাল্লিদরা ঘন ঘন কপি পেস্ট মেরে থাকে কোনোরূপ তাহক্বীক ছাড়াই। আর যেহেতু তারা মুকাল্লিদ, তাই তাদের দ্বারা এটি অসম্ভব কিছু না।
হানাফীদের লিংক http://www.alkawsar.com/article/384
যাইহোক নিম্নে আস্তে আমিন বলার হাদিসসমূহ ও আমাদের বক্তব্য তুলে ধরা হলো। হানাফী আলেমদের বলছি, যদি পারেন, তবে হাদিসগুলোকে সহীহ প্রমাণ করুন। এতে আপনাদেরও ভালো, আমাদেরও ভালো। আর আমরাও চাই সত্য প্রতিষ্ঠিত হোক।
আমীন আস্তে বলা সম্পর্কে দলিলসমূহ নিম্নে দেওয়া হলো।
১ম দলিল:
হযরত ওমর রা. বলেন, চারটি বিষয় ইমাম অনুচ্চস্বরে পাঠ করবে : আউযু বিল্লাহ, বিসমিল্লাহ, আমীন ও আল্লাহুম্মা রাববানা ওয়া লাকাল হামদ।
أربع يخفيهن الإمام : التعوذ وبسم الله الرحمن الرحيم وآمين واللهم ربنا ولك الحمد
(ইবনে জারীর, কানযুল উম্মাল ৮/২৭৪; বিনায়াহ ২/২১৯)
জবাব:
এই হাদিসটি মুনকাতি হওয়ার কারণে যঈফ। কারণ হাদিসটি ইব্রাহিম নাখয়ী বর্ণনা করেছেন উমার রা. হতে। আর ইব্রাহিম নাখয়ী উমার রা. কে পান নাই।
এছাড়া আরো একটি বর্ণনা রয়েছে আবদুর রহমান বিন আবী লায়লা হতে উমার বিন খাত্তাব রা. এর বর্ণনা। সেটিও মুনকাতি। কারণ আবদুর রহমান বিন আবী লায়লাও উমার বিন খাত্তাব রা. কে পান নাই। (তাহযিবুত তাহযিব)। সুতরাং হাদিসটি দলিলযোগ্যও নয়, প্রমাণিতও নয়।
২য় দলিল:
২. আবু ওয়াইল রাহ. বলেন, খলীফায়ে রাশেদ আলী রা. ও হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বিসমিল্লাহ উঁচু আওয়াজে পড়তেন না। তেমনি আউযুবিল্লাহ ও আমীনও।
كان علي وعبد الله لا يجهران ببسم الله الرحمن الرحيم ولا بالتعوذ، ولا بالتأمين، قال الهيثمي : رواه الطبراني في الكبير وفيه أبو سعد البقال، وهو ثقة مدلس.
(আলমুজামুল কাবীর, হাদীস : ৯৪০৪; মাজমাউয যাওয়াইদ ২/১০৮)
জবাব:
হাদিসটি যঈফ। কারণ হাদিসটির সানাদে রয়েছেন, আবু সাঈদ বিন আল মারযাবান আল বাকাল।
ইমাম বুখারী বলেন, তিনি মুনকারুল হাদিস;
ইমাম আমর বিন আলী বলেন, তিনি মাতরুকুল হাদিস;
ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি মাতরুক;
ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি যঈফ;
ইমাম ইজলী বলেন, তিনি যঈফ;
ইমাম আবু হাতেম বলেন, তিনি হাদিসের ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য নন।
এছাড়াও আরো অনেকেই এই রাবীর সমালোচনা করেছেন (তাহযিবুত তাহযিব)
এছাড়া আবু সাঈদ বিন আল মারযাবান আল বাকাল মুদাল্লিস এবং মুদাল্লিস রাবীর (বর্ণনাকারীর) আন শব্দে বর্ণিত হাদিস দলিল হিসেবে অগ্রহণযোগ্য।  হাদিসটি যঈফ হওয়ার এটিও অন্যতম কারণ।
মোট কথা জমহুর মুহাদ্দিসিনের নিকট তিনি যঈফ।  তাই দলিলটি অগ্রহণযোগ্য। অথচ হানাফীরা এসব অগ্রহণযোগ্য যঈফ হাদিসই দলিল হিসেবে দিয়ে থাকে নিজেদের মাযহাবী মতকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। আর মুকাল্লিদরা সেগুলো প্রচার করে এবং নিজেদের হুজুরদের আকড়ে ধরে অন্ধের মতো।
৩য় দলিল:
আবু ওয়াইল থেকে বর্ণিত, হযরত ওমর রা. ও হযরত আলী রা. বিসমিল্লাহ উচ্চস্বরে পড়তেন না।
لم يكن عمر وعلي يجهران بسم الله الرحمن الرحيم ولا بآمين.
(ইবনে জারীর তবারী ; আলজাওহারুন নকী ১/১৩০)
জবাব:
এই হাদিসটিও যঈফ। কারণ হাদিসটির সানাদে রয়েছেন, আবু সাঈদ বিন আল মারযাবান আল বাকাল।
ইমাম বুখারী বলেন, তিনি মুনকারুল হাদিস;
ইমাম আমর বিন আলী বলেন, তিনি মাতরুকুল হাদিস;
ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি মাতরুক;
ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি যঈফ;
ইমাম ইজলী বলেন, তিনি যঈফ;
ইমাম আবু হাতেম বলেন, তিনি হাদিসের ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য নন।
এছাড়াও আরো অনেকেই এই রাবীর সমালোচনা করেছেন (তাহযিবুত তাহযিব)
এছাড়া আবু সাঈদ বিন আল মারযাবান আল বাকাল মুদাল্লিস এবং মুদাল্লিস রাবীর (বর্ণনাকারীর) আন শব্দে বর্ণিত হাদিস দলিল হিসেবে অগ্রহণযোগ্য।  হাদিসটি যঈফ হওয়ার এটিও অন্যতম কারণ।
মোট কথা জমহুর মুহাদ্দিসিনের নিকট তিনি যঈফ।  তাই দলিলটি অগ্রহণযোগ্য। অথচ হানাফীরা এসব অগ্রহণযোগ্য যঈফ হাদিসই দলিল হিসেবে দিয়ে থাকে নিজেদের মাযহাবী মতকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। আর মুকাল্লিদরা সেগুলো প্রচার করে এবং নিজেদের হুজুরদের আকড়ে ধরে অন্ধের মতো।
৪র্থ দলিল:
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, ইমাম তিনটি বিষয় অনুচ্চস্বরে পড়বে : আউযুবিল্লাহ …, বিসমিল্লাহ … ও আমীন।
يخفي الإمام ثلاثا : الاستعاذة وبسم الله الرحمن الرحيم وآمين.
(আলমুহাল্লা ৩/১৮৪)
জবাব:
হাদিসটির সম্পূর্ণ সানাদ নিম্নে দেওয়া হলো:-
আবী হামজা => ইব্রাহিম নাখয়ী => আলকামাহ ও আসওয়াদ => আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ
عن أبي حمزة عن إبراهيم النخعي عن علقمة ، والأسود ، كلاهما عن عبد الله بن مسعود قال : يخفي الإمام ثلاثا – : الاستعاذة ، وبسم الله الرحمن الرحيم ، وآمين
উপরোক্ত হাদিসটি যঈফ। কারণ সানাদে রয়েছেন ‌“আবী হামজা মায়মুনা” তিনি মাতরুকুল হাদিস অর্থাৎ হাদিসের ক্ষেত্রে পরিত্যাজ্য। ইনি মারাত্মক দুর্বল। এমন হাদিস যে, হানাফীরা কিভাবে দলিল হিসেবে দেয়, তা আল্লাহই জানেন। এদের আল্লাহর ভয় আছে কি না সন্দেহ।
এছাড়া হানাফীরা দলিল না পেয়ে আস্তে আমিন বলার পক্ষে ইব্রাহিম নাখয়ীর “নিজস্ব” মন্তব্য দলিল হিসেবে দিয়েছেন যা খন্ডন করার কোনোই প্রয়োজন নাই। আমরা শুধুমাত্র হাদিসগুলোর উত্তর দিলাম। যদি কোনো হানাফী আলিম পারেন তো আমাদের বক্তব্যকে উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে ভুল প্রমাণ করেন। আমরা মেনে নিব ইনশাআল্লাহ। আশা করি আপনারা টপিকের বাহিরে যাবেন না। আল্লাহ আমাদের সত্য বুঝার ও আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন।

 www.facebook.com/hafej.mihaz.1




হাদিসে রাসূল সা:

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা: হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সা: এরশাদ করেছেন, ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি জিনিষের উপর স্থাপিত।
1। এ কথার সাক্ষ প্রদান করা যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা‘বুদ নাই এবং রাসূল সা: আল্লাহর বান্দা ও রাসূল
2। নামাজ প্রতিষ্ঠা করা।
3। যাকাত প্রদান করা।
4। হজ্ব আদায় করা।
5। রমজান মাসে রোজা রাখা।
www.facebook.com/hafej.minhaz.1
 

শনিবার, ৭ মে, ২০১৬

কম্পিউটারের গুরুত্বপুর্ণ শর্টকাট




Alt+0131= ƒ (টাকা) Alt+0165= ¥ (ইয়েন) Alt+0177= ± (যোগবিয়োগ) Alt+0215= × (গুণ) Alt+Ctrl+T= ™ (ট্রেডমার্ক) Alt+ Ctrl+R= ® (রেজিষ্টার্ড) Alt+0163= £ (লীরা) Alt+0128= € (পাউন্ড) Alt+0247= ÷ (ভাগ) Alt+248/0186= º (ফারেনহাইট) Ctrl + A = সিলেক্ট অল Ctrl + B = টেক্সট বোল্ড Ctrl + C = কোন কিছু কপি করা Ctrl + D = ফন্ট পরিবর্তনের ডায়ালগ বক্স প্রদর্শন করা Ctrl + E = সেন্টার এলাইনমেন্ট করা Ctrl + F = কোন শব্দ খোঁজাবা প্রতিস্থাপন করা Ctrl + G = গো টু কমান্ড Ctrl + H = রিপ্লেস কমান্ড Ctrl + I = টেক্সট ইটালিক Ctrl + J = টেক্সট জাস্টিফাইড এলাইনমেন্ট করা Ctrl + K = হাইপারলিংক তৈরী করা Ctrl +L = টেক্সট লেফট এলাইনমেন্ট করা Ctrl + M = ইনভেন্ট দেয়ার জন্য Ctrl + N = নতুন কোন ডকুমেন্ট খোলার জন্য Ctrl + O = পূর্বে তৈরী করা কোন ফাইল খোলার জন্য Ctrl + P = ডকুমেন্ট প্রিন্ট Ctrl + Q = প্যারাগ্রাফেরমাঝে স্পেসিং করার জন্য Ctrl + R = টেক্সটকে রাইট এলাইনমেন্ট করা Ctrl + S = ফাইল সেভ Ctrl + T = ইনডেন্ট পরিবর্তন করার জন্য Ctrl + U = টেক্সট আন্ডারলাইনCtrl + V = টেক্সট পেষ্ট করার জন্য Ctrl + W = ফাইল বন্ধ করার জন্য Ctrl + X = ডকুমেন্ট থেকে কিছু কাট্ করার জন্য Ctrl + Y = রিপিট করার জন্য Ctrl + Z = আন্ডু বা পূর্বের অবস্থায়

বৃহস্পতিবার, ৫ মে, ২০১৬

রোজ নামচা।

দৃপ্তিময় সূর্যে আভা পৃথিবীর চারিদিকে আলো ছড়াচ্ছে। আকাশে হালকা মেঘ এদিক-সেদিক ঘুরাফেরা করছে।সারি-সারি সুপারির গাছ দাড়িয়ে আছে, দেখে মনে হয় কাউকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য তাদের এই দন্ডাইমান। গাছের পাতা গুলি মৃদু বাতাসে হালকা দুল খাচেছ।
 শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় মাদ্রাসা বন্দ, হাতে তেমন কাজ নেই। ভাবলাম শেরপুর আইটি ইনিস্টিটিউট থেকে এক ঘুরে আসে, আগের রাতে সজিব স্যারের সাথে কথা হয়েছে স্যার আমাকে আসতে বলছেন, স্যার আমাকে ডাকবে এটা আমার কাছে অনেক বড় সৌভাগ্যের বিষয়। রাতে কাজ থাকায় আসতে পারি নাই। সকাল 10 টায় আইটিতে ডুকলাম। স্যারদের সাথে কুশল বিনিময় করার পর কম্পিউটারে বসে পড়লাম। আমার একটা বদ অভ্যাস কম্পিউটার দেখলেই কম্পিউটার চালাতে ইচ্চা করে যদিও তেমন পারি নাই। অন্তু স্যার আমাকে একটি ব্লগের টেমপেলেট বানানো শিথিয়ে দিলেন। এজন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। স্যার আমাকে খুব স্নেহ করে। যদিও তাদেরকে সম্মান দেখাতে পারি না।
আমার পাশের কম্পিউটারে বসা ম্যাডাম। ম্যাডামের মনটা উদার। কোন সমস্যা হলে জিজ্ঞাসা করলে হাসি মুখে সমস্যার সমাধান করে  দেই।

হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ) এর বংশ তালিকা:


হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ) থেকে একেবারে হযরত আদম (আঃ) পর্যন্ত পূর্বপুরুষগণের
তালিকা

হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ)
তাঁহার পিতা আব্দুল্লাহ,
তাঁহার পিতা আব্দুল মোত্তালিব,
তাঁহার পিতা হাসিম,
তাঁহার পিতা আব্দ মানাফ,
তাঁহার পিতা কুছাই,
তাঁহার পিতা কিলাব,
তাঁহার পিতা মুরাহ,
তাঁহার পিতা কা’ব
তাঁহার পিতা লুই,
তাঁহার পিতা গালিব,
তাঁহার পিতা ফাহর,
তাঁহার পিতা মালিক,
তাঁহার পিতা আননাদর,
তাঁহার পিতা কিনান,
তাঁহার পিতা খুজাইমা,
তাঁহার পিতা মুদরাইকা,
তাঁহার পিতা ইলাস,
তাঁহার পিতা মুদার,
তাঁহার পিতা নিজার,
তাঁহার পিতা মা’দ,
তাঁহার পিতা আদনান,
তাঁহার পিতা আওয়াদ,
তাঁহার পিতা হুমাইসা,
তাঁহার পিতা সালামান,
তাঁহার পিতা আওয,
তাঁহার পিতা বুয,
তাঁহার পিতা কামওয়াল,
তাঁহার পিতা ওবাই,
তাঁহার পিতা আওয়ান,
তাঁহার পিতা নাসিদ,
তাঁহার পিতা হিযা,
তাঁহার পিতা বালদাস,
তাঁহার পিতা ইয়াদলাফ,
তাঁহার পিতা তাবিখ,
তাঁহার পিতা জাহিম,
তাঁহার পিতা নাহিস,
তাঁহার পিতা মাখি,
তাঁহার পিতা আ”য়েফ
তাঁহার পিতা আবকার,
তাঁহার পিতা উবাইদ,
তাঁহার পিতা আদ দাহা,
তাঁহার পিতা হামদান,
তাঁহার পিতা সানবার,
তাঁহার পিতা ইয়াসরিবি,
তাঁহার পিতা ইয়াহজিন,
তাঁহার পিতা ইয়ালহান,
তাঁহার পিতা ইরাওয়া,
তাঁহার পিতা আইযি,
তাঁহার পিতা যিশান,
তাঁহার পিতা আইছার,
তাঁহার পিতা আফনাদ,
তাঁহার পিতা আইহাম,
তাঁহার পিতা মুকাসির,
তাঁহার পিতা নাহিস,
তাঁহার পিতা যারিহ,
তাঁহার পিতা সামি,
তাঁহার পিতা মায্যি,
তাঁহার পিতা ইওয়াদ,
তাঁহার পিতা ইরাম,
তাঁহার পিতা হিদার,
তাঁহার পিতা হযরত ইসমাইল (আঃ),
তাঁহার পিতা হযরত ইবরাহিম (আঃ),
তাঁহার পিতা তারক
তাঁহার পিতা নাহুর,
তাঁহার পিতা সারুয,
তাঁহার পিতা রা’উ,
তাঁহার পিতা ফাহিয,
তাঁহার পিতা আবীর,
তাঁহার পিতা আফরাহশাদ,
তাঁহার পিতা সা’ম,
তাঁহার পিতা হযরত নূহ (আঃ),
তাঁহার পিতা লামিক,
তাঁহার পিতা মাতু সালিখ,
তাঁহার পিতা হযরত ঈদ্রীস (আঃ),
তাঁহার পিতা ইয়ারিদ,
তাঁহার পিতা মালহালিল,
তাঁহার পিতা কিনান,
তাঁহার পিতা আনস,
তাঁহার পিতা হযরত শীস (আঃ),
তাঁহার পিতা হযরত আদম (আঃ)

জুমআর নামাজের বিশেষ ফযিলত:


উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য এটি একটি মহান দিন। এ জুমআর দিনটিকে সম্মান করার জন্য ইহুদী-নাসারাদের উপর ফরজ করা হয়েছিল; কিন্তু তারা মতবিরোধ করে এই দিনটিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। অতঃপর ইহুদীরা শনিবারকে আর
খ্রিষ্টানরা রবিবারকে তাদের ইবাদতের দিন বানিয়েছিল। অবশেষে আল্লাহ তাআলা এ উম্মতের জন্য শুক্রবারকে মহান দিবস ও ফযীলতের দিন হিসেবে দান করেছেন। আর উম্মতে
মুহাম্মদী তা গ্রহণ করে নিলো। [বুখারী, মুসলিম]
হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি জুমআর দিন ফরজ গোসলের মতো গোসল করে প্রথম দিকে মসজিদে হাজির হয়, সে যেনো একটি উট কুরবানী করলো, দ্বিতীয় সময়ে যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সে যেনো একটি গরু কুরবানী করলো, তৃতীয় সময়ে যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল সে যেনো একটি ছাগল কুরবানী করলো। অতঃপর চতুর্থ সময়ে যে ব্যক্তি মসজিদে গেল সে যেনো একটি মুরগী কুরবানী করলো। আর পঞ্চম সময়ে যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল সে যেনো একটি ডিম কুরবানী করলো। অতঃপর ইমাম যখন বেরিয়ে এসে মিম্বরে বসে গেলেন খুৎবার জন্য, তখন ফেরেশতারা লেখা বন্ধ করে খুৎবা শুনতে বসে যায়। [সহীহ বুখারী]
হযরত আউস বি আউস আস সাকাফী রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সা. ইরশাদ করেন, জুমাআর দিন যে ব্যক্তি গোসল করে প্রথম ভাগে মসজিদে গমন করে, পায়ে হেঁটে মসজিদে যায় (অর্থাৎ কোনো কিছুতে আরোহণ করে নয়), ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসে, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, কোনো কিছু নিয়ে খেল তামাশা করে না; সে ব্যক্তির প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য রয়েছে বছরব্যাপী রোজা পালন ও সারা বছর রাত জেগে ইবাদত করার সমতুল্য সওয়াব। [মুসনাদে আহমাদ]
রাসূল সা. ইরশাদ করেন, জুমআর সালাতে তিন ধরণের লোক হাজির হয়,
১. এক ধরণের লোক আছে যারা মসজিদে প্রবেশের পর তামাশা করে, তারা বিনিময়ে তামাশা ছাড়া কিছুই পাবে না।
২. দ্বিতীয় আরেক ধরণের লোক আছে যারা জুমআয় হাজির হয় সেখানে দু’আ মুনাজাত করে, ফলে আল্লাহ যাকে চান তাকে কিছু দেন আর যাকে ইচ্ছা দেন না।

৩. তৃতীয় প্রকার লোক হলো যারা জুমআয় হাজির হয়, চুপচাপ থাকে, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, কারও ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনে আগায় না, কাউকে কষ্ট দেয় না, তার দুই জুম’আর মধ্যবর্তী ৭ দিন সহ আরও তিন দিন যোগ করে মোট দশ দিনের গুনাহ খাতা আল্লাহ্ তাআলা মাফ করে দেন। [সুনানে আবু দাউদ]

হাদিস থেকে

হযরত আবু হুরায়রা  রা: হইতে বর্নিত । তিনি বলেন, রাসুল সা: এরশাদ করেন, ঈমানের সত্তরটিরও বেশি শাখা-প্রশাখা রয়েছে। তম্নধ্যে সর্ব  পেক্ষা উত্তম  শাখা হচ্ছে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা ( তথা বিশ্বাস স্থাপন করা) আর সর্ব নিম্ন শাখা হচ্ছে রাস্তা হতে কোন কস্ট দায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা। এবং লজ্জা হলো ঈমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা।
( বুখারী ও মুসলিম)

এক বুজুর্গের ইবাদত

এক বুজুর্গের ইবাদতঃ
হযরত  জাবজানি ( রহ:) বলেন, বনী ইস্রাইলের এক ব্যক্তি এক দুশ্চরিত্রা মহিলার সঙ্গ লাভের পর গোসল করিবার উদ্দেশ্যে এক নহরে অবতরণ করিল। সঙ্গে সঙ্গে পানি তাহাকে লক্ষ করিয়া বলিয়া উঠিল, হে আদম সন্তান! তোমার কি লজ্জা-শরম বলিতে কিছুই নাই? তুমি তো তওবা করিয়াছিরলে যে, আর কখনো এই অপরাধ করিবে না। এই কথা শুনিয়া সে ভয় পাইয়া ডাঙ্গায় উঠিয়া আসিল। অতঃপর সে পথে পথে ঘুরিয়া শুধু বলিতে লাগিল- “ আমি সারা জীবন আল্লাহ্ পাকের নাফরমানী করিয়াছি। ” একদিন সে এক পাহাড়ের উঠিয়া দেখিতে পাইল, সেখানে ১২ জন মানুষ আল্লাহ পাকের ইবাদতে মশগুল। এই দৃশ্য দেখিয়া সেও তাহাদের সঙ্গে ইবাদতে লিপ্ত হইয়া গেল। কিছুদিন পর সেখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে আবেদগণ ঘাস ও চারা গাছের সন্ধানে লোকালয়ের দিকে চলিল। পথে একটি নহর অতিক্রমের সময় সেই লোকটি বলিল, আমি তোমাদের সঙ্গে যাইতে পারিব না। কারণ জিজ্ঞাসা করিলে সে বলিল, ঐখানে এক বস্তু আমার বিগত জীবনের অপরাধ সম্পর্কে অবগত। সুতরাং উহার নিকট গমন করিতে আমার লজ্জাবোধ হইতেছে। 
 অবশেষে আবেদগণ তাহাকে ত্যাগ করিয়া নহর অতিক্রম করিতে লাগিল। এই সময় নহর বলিয়া উঠিল, হে আবেদগণ! তোমাদের সঙ্গীটি কোথায়? জবাবে তাহারা জানাইল, সে বলিতেছে এখানে এমন এক বস্তু আছে, যে তাহার বিগত অপরাধ সম্পর্কে অবগত। উহার সম্মুখে আসিতে তাহার সঙ্কোচবোধ হইতেছে। এই কারণে সে আমাদের সঙ্গে আসিতে পারে নাই। আবেদগণের এই কথা শুনিয়া নহর বলিল, সুবহানাল্লাহ! তোমাদের কোন সন্তান বা আপনজন কোন অপরাধ করিবার পর যদি সে তওবা করিয়া পুনরায় সুপথে ফিরিয়া আসে তবে কি তোমরা তাহাকে ভালোবাসিবে না?  তোমাদের সঙ্গীটিও তওবা করিয়া পুনরায় নেক  আমল করিতে শুরু করিয়াছে। এখন আমিও তাহাকে ভালোবাসি। তোমরা তাহাকে লইয়া আস এবং নহরের প্রান্তে আল্লাহর ইবাদত করিতে থাক। আবেদগণ ঐ ব্যক্তিকে এই সুসংবাদ দান করিল এবং নহরের প্রান্তে আসিয়া ইবাদত করিতে লাগিল। তাহারা দীর্ঘকাল এইভাবে ইবাদত করিবার পর এক সময় ঐ ব্যক্তি সেখানে ইন্তেকাল করিল। তাহার ইন্তেকালের পর নহর আওয়াজ দিয়া বলিল, হে আবেদগণ!  হে আল্লাহর বান্দাগণ! তাহাকে আমার পানি দ্বারা গোসল দিয়া আমার পাশেই দাফন কর, যেন কেয়ামতের দিন আমার অঙ্গন হইতেই তাহার পুনরুত্থান হয়। আবেদগণ নহরের কথামত মৃতের কাফন-দাফন সম্পন্ন করিয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিল  যে, আজ রাতে তাহারা কবরের পাশেই শয়ন করিবে এবং সকালে উঠিয়া অন্যত্র চলিয়া যাইবে। কিন্তু সকালে তাহার ঘুম হইতে জাগ্রত হইয়া দেখিতে পাইল, কবরের উপরে ১২ টি সাইপ্রাসবৃক্ষ দাঁড়াইয়া আছে। তাহারা এই বিশ্ময়কর ঘটনার বিশ্লেষন করিয়া এই সিদ্ধান্তে ‍ উপনীত হইল যে, এই ঘটনা দ্বারা আল্লাহ্ পাক আমাদিগকে এখানেই অবস্থান করিতে ইশারা করিয়াছেন। অতঃপর তাহারা সেখানেই ইবাদত-বন্দেগীতে মশগুল রহিল। তাহাদের মধ্যে কেহ ইন্তেকাল করিলে তাহাকে ঐ কবরের পাশেই দাফন করা হইত। এইভাবে একে একে সকলেই ইন্তেকাল করিল।

বুধবার, ৪ মে, ২০১৬

প্রচলিত ভুল

লোকমুখে শোনা যায়, আখেরী যামানায় এমন অবস্থা হবে যে, একজন পুরুষের বিপরীতে ১৫/২০ জন নারী হবে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি এমন দাঁড়াবে যে  কয়েকজন নারী একজন পুরুষকে তাড়া করবে আর সে দৌড়ে পালাবে এবং নিরুপায় হয়ে গাছে আশ্রয় নিবে। সেখান থেকে সে প্রস্রাব করবে। সেই প্রস্রাব পান করে তারা গর্ভবতী হবে।
এটি একেবারেই মনগড়া অলীক কাহিনী মাত্র। নির্ভরযোগ্য কোনো কিতাবে এর কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। এমন কথাবার্তা বর্ণনা করা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
তবে এ কথা সত্য যে, কিয়ামতপূর্ব যুগে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। (দ্র. সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০১২; ফাতহুল মুলহিম ৩/৪৩)

একটি ভুল প্রচলন :



 কুরআন মাজীদ পড়ে গেলে কি তা ওজন করে চাল সদকা করতে হয়?

কিছু কিছু মানুষের ধারণা, হাত থেকে যদি কুরআন মাজীদ পড়ে যায় তাহলে কুরআন মাজীদের (মুসহাফের) ওজনে চাল সদকা করতে হয়। এটি কুরআনের প্রতি আযমত মুহাব্বতের কারণে হলেও তা একটি ভুল প্রচলন
এছাড়াও এখানে আরেকটি আপত্তিকর কুরআনের প্রতি এক ধরনের অসম্মানের বিষয় রয়েছে। তা হল, কুরআন মাজীদ (মুসহাফ) ওজন করা। কুরআন মাজীদের সম্মান করতে গিয়ে মনগড়া পন্থা অবলম্বনের কারণে কুরআনের বেহুরমতি-অসম্মান হয়ে যাচ্ছে। চিন্তাশীল মানুষ মাত্রই তা উপলব্ধি করতে সক্ষম।
আমরা সাবধান থাকব, যাতে হাত থেকে মুসহাফ পড়ে না যায়। মুসহাফ এমনভাবে ধরব না বা এমন স্থানে রাখব না, যার কারণে তা পড়ে যাওয়ার আশংকা থাকে। আর নিজের অসাবধানতার কারণে যদি পড়ে যায় তাহলে এস্তেগফার করব এবং চাইলে এমনিতেই কিছু সদকাও করতে পারি
কুরআন মাজীদের প্রতি আজমত মুহাব্বত মুমিনের ঈমানী বৈশিষ্ট্য। কিন্তু আযমত মুহাব্বতের প্রকাশও হতে হবে শরীয়ত নির্দেশিত পন্থায়। তাহলেই তা নির্ভুল গ্রহণযোগ্য হবে। প্রসঙ্গত এটাও স্মরণ রাখি, কুরআন মাজীদের প্রতি আসল আজমত মুহাব্বত হল, কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করা, এর ইলম হাসিল করা এবং কুরআন নির্দেশিত পন্থায় জীবন পরিচালনা করার চেষ্টা করা।   www.facebook.com/hafej.minhaz.1