জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে;
হজ্জের ফরজ হচ্ছে- ৩টি। (১) ইহরাম বাঁধা অর্থাৎ মীকাত হতে ইহরাম বাঁধা।
(২) ওকুফে আরাফা অর্থাৎ ৯ই জিলহজ্জের দ্বিপ্রহরের পর হতে অর্থাৎ সূর্য ঢলার
পর হতে ১০ই জিলহজ্জ সুব্হে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত যে কোনো সময় আরাফার
ময়দানে উপস্থিত থাকা। (৩) তাওয়াফে যিয়ারত অর্থাৎ ১০, ১১ ও ১২ই জিলহজ্জ
তারিখের মধ্যে কা’বা শরীফ তাওয়াফ করা।
Translate
Massage for you
Allah is my lord
শুক্রবার, ১৫ জুলাই, ২০১৬
হজ্বের ফরজ কয়টি ও কি কি?
লেবেলসমূহ:
আওলিয়াগণ,
কালিমা,
তাফসীরুল কোরান,
দেওবন্দ ইতিহাস
নিবন্ধন সংক্রান্ত প্রতিবেদন
২২/০৬/২০১৬খ্রি. তারিখ বিকাল ৫:০০টা পর্যন্ত প্রাক্-নিবন্ধন সংক্রান্ত প্রতিবেদন
মোঃ মিনহাজ উদ্দীন।।
সরকারি ব্যবস্থাপনা:
সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধিত হজযাত্রীর সংখ্যা ৪,৭২৪ জন
সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধনের জন্য ডাটা এন্ট্রির সংখ্যা ৪,৮৬৮ জন
সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ নং-১ এ নিবন্ধিত হজযাত্রীর সংখ্যা ৯৯৬ জন
সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ নং-২ এ নিবন্ধিত হজযাত্রীর সংখ্যা ৩,৭২৮ জন
সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে গমনেচ্ছুদের ডাটা এট্রির সংখ্যা ৬,০৩৯ জন
সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক্-নিবন্ধিত হজে গমনেচ্ছুর সংখ্যা ৫,২৩৩ জন
সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক্-নিবন্ধন স্বেচ্ছায় বাতিল করেছেন ১০১ জন
বেসরকারি ব্যবস্থাপনা:
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধিত হজযাত্রীর সংখ্যা ৮৬,০২৯ জন
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধনের জন্য ডাটা এন্ট্রির সংখ্যা ৮৭,০৭৪ জন
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে গমনেচ্ছুর ডাটা এন্ট্রির সংখ্যা ১৪৬,১৯১ জন
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক্-নিবন্ধিত হজে গমনেচ্ছুর সংখ্যা ১৩৮,৪৬০ জন
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক্-নিবন্ধন স্বেচ্ছায় বাতিল করেছেন ২,৪৭৯ জন
অন্যান্য তথ্য:
ডাটা এন্ট্রিকৃত হজে গমনেচ্ছুদের মধ্যে পুরুষ ১০১,২৮৯ জন
ডাটা এন্ট্রিকৃত হজে গমনেচ্ছুদের মধ্যে মহিলা ৫০,৯৪১ জন
ডাটা এন্ট্রিকৃত হজে গমনেচ্ছুর মধ্যে ১৮ বছরের নীচে ১,৪৭০ জন
ডাটা এন্ট্রিকৃত হজে গমনেচ্ছুর মধ্যে প্রবাসী ১,১৮৭ জন
ডাটা এন্ট্রিকৃত হজে গমনেচ্ছুর মধ্যে ১৮ বছরের ঊর্ধেব ১৪৯,৫৭৩ জন
সর্বমোট নিবন্ধিত হজযাত্রী (সরকারি – ৪,৭২৪ + বেসরকারি – ৮৬,০২৯) ৯০,৭৫৭ জন
সর্বমোট প্রাক্-নিবন্ধিত হজযাত্রী (সরকারি – ৫,২৩৩ + বেসরকারি – ১৩৮,৪৬০) ১৪৩,৬৯৩ জন
সর্বমোট প্রাক্-নিবন্ধন স্বেচ্ছায় বাতিল করেছেন (সরকারি ১০১ + বেসরকারি ২,৪৭৯) ২,৫৮০ জন
সূত্র: হজ্ব ব্যবস্থাপনা পোর্টাল।
লেবেলসমূহ:
আম্বিয়ায়ে কেরাম,
কালিমা,
তাফসীরুল কোরান,
দেওবন্দ ইতিহাস
২০১৬ সালের হজ্বের কার্যক্রমঃ
এক নজরে হজ ২০১৬ এর কার্যক্রম
1. হজ : ৯ জিলহজ ১৪৩৭ (সম্ভাব্য ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ )2.সর্বমোট হজযাত্রী: ২০১৬ সালে হজ পালনের জন্য গাইড, মুনাজ্জেম এবং সরকারি খরচে হজ পালনকারীসহ ১,০১,৭৫৮ (এক লক্ষ এক হাজার সাতশত আটান্ন) জন বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব যেতে পারবেন।
3.এ বছর (২০১৬ সাল) থেকেই প্রাক্-নিবন্ধন পদ্ধতি চালু হলো ।
4.প্রাক নিবন্ধনের পরে চলতি বছর হজে যাওয়ার জন্য নির্বাচিত হলে নিবন্ধনের জন্য সমুদয় (প্যাকেজ অনুযায়ী) তারিখ টাকা জমা দেওয়ার শেষ সময় : ৩০ মে ২০১৬
5.টাকা জমা দেয়ার ব্যাংকসমূহ: ব্যাংক তালিকা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি আকারে জানানো হবে।
6.সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ ২টি। একটিতে খরচ ৩ লাখ ৬০ হাজার ২৮টাকা অন্যটিতে খরচ ৩ লাখ ৪ হাজার ৯০৩ টাকা ।
7.বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ন্যুনতম প্যাকেজ: ৩ লাখ ৪ হাজার ৯০৩ টাকা
8. হজযাত্রীদের সম্ভাব্য ফ্লাইট শুরু : ১ আগস্ট ২০১৬।
9. বিস্তারিত তথ্যের জন্য : www.hajj.gov.bd
লেবেলসমূহ:
ইসলামের ইতিহাস,
কালিমা,
তাফসীরুল কোরান,
দেওবন্দ ইতিহাস
হজ্বের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তালিকাঃ
যারা হব্জে যাচ্ছেন তাদের জন্য জানা প্রয়োজন।
হজ্বে নিম্নোক্ত জিনিষ পত্র সঙ্গে নেওয়া প্রয়োজন।
১। ইহরাম দুই সেট। ( পরনের জন্য আড়াই হাত বহরের দুটি, গায়ের জন্য তিন হাত বহরের দুইটি)
২। মহিলাদের ইহরামের জন্য নির্দিষ্ট কোন কাপড় নাই, মহিলার ঐ সমস্ত (সেলাই যুক্ত) কাপড় সাথে নিয়ে যাবেন যেগুলো তারা স্বাভাবিক অবস্থায় পরিধান করে থাকেন যেমন- সালোয়ার কামিজ, ম্যাক্সি, শাড়ী, বোরখা, চাদর, বড় ওড়না ইত্যাদি । প্যান্টি, স্কাপ, মাধার ক্যাপ, হাতের-পায়ের মোজা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষ)।
৩। লুঙ্গি, পায়জামা, পাঞ্জাবি, গেঞ্জি, টুপি, ( দুই সেট করে) রুমাল, গামছা বা তোয়ালে, তৈল-সাবান, আয়না, চিরুনি, বিছানার চাদর,( সিঙ্গেল সাইজ) প্লেট ও গ্লাস,(ম্যালামাইনের) এলার্ম ঘড়ি।
হজ্বে নিম্নোক্ত জিনিষ পত্র সঙ্গে নেওয়া প্রয়োজন।
১। ইহরাম দুই সেট। ( পরনের জন্য আড়াই হাত বহরের দুটি, গায়ের জন্য তিন হাত বহরের দুইটি)
২। মহিলাদের ইহরামের জন্য নির্দিষ্ট কোন কাপড় নাই, মহিলার ঐ সমস্ত (সেলাই যুক্ত) কাপড় সাথে নিয়ে যাবেন যেগুলো তারা স্বাভাবিক অবস্থায় পরিধান করে থাকেন যেমন- সালোয়ার কামিজ, ম্যাক্সি, শাড়ী, বোরখা, চাদর, বড় ওড়না ইত্যাদি । প্যান্টি, স্কাপ, মাধার ক্যাপ, হাতের-পায়ের মোজা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষ)।
৩। লুঙ্গি, পায়জামা, পাঞ্জাবি, গেঞ্জি, টুপি, ( দুই সেট করে) রুমাল, গামছা বা তোয়ালে, তৈল-সাবান, আয়না, চিরুনি, বিছানার চাদর,( সিঙ্গেল সাইজ) প্লেট ও গ্লাস,(ম্যালামাইনের) এলার্ম ঘড়ি।
৪। ব্রাশ/মেসওয়াক, টুথপেষ্ট, মেরিল/ভেসলিন ( মক্কায় অনেক গরম ঠুট ও হাত-পা ফেটে যেতে পারে)।
৫। খাতা/ডায়েরী, কলম, ( প্রয়োজনীয় কিছু লেখার জন্য)
৬। শুকনা খাবার, যেমন বিস্কুট, চিড়া ইত্যাদি)
৭। স্পঞ্জের স্যান্ডেল।
৮। বেডিংপত্রের ওপরে বড় অক্ষরে ইংরেজিতে আপনার নাম. পাসপোর্ট নম্বর ও ঠিকানা লিখে রাখুন। বেডিংপত্র হালকা রাখুন।
বি: দ্র: নামাজ পড়তে যেয়ে যদি আপনার জুতা খুঁজে না পান, তবে অন্যের জুতা ইচ্ছাকৃতভাবে মসজিদ থেকে উঠিয়ে নিবেন না। সামান্য কয়েক রিয়াল মূল্যের জুতার জন্য হজ্জের ক্ষতি যেন না হয়। স্যান্ডেল রাখার জন্য কাপড়ের তৈরী খুব ছোট ব্যাগ নিজ দেশ থেকে নিয়ে আসা সুবিধাজনক)।
বিস্তারিত জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন- www.facebook.com/hafej.minhaz.1
লেবেলসমূহ:
কওমি মাদ্রাসার ইতিহাস,
কালিমা,
তাফসীরুল কোরান,
দেওবন্দ ইতিহাস
বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০১৬
হজ্জের যাবতীয় নিয়ম-কানুন
মিনহাজ উদ্দীন:
হজে যাচ্ছেন, আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করুন-হে আল্লাহ! আমার হজ্বকে সহজ করে দাও, কবুল করো-দেখবেন, আপনার যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। হজের দীর্ঘ সফরে ধৈর্য ধারন করতে হবে। সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মানসিকতা রাখবেন, তাহলে অল্পতেই বিচলিত হবেন না।
হজের প্রস্তুতিপর্বে-পিলগ্রিম পাস ( পাসপোর্ট) তৈরি করা, বিমানের টিকিট সংগ্রহ ও তারিখ নিশ্চিত করা, প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করা, ম্যানিনজাইটিস টিকা বা অন্যান্য ভ্যাকসিন দেওয়া | হজের এসব নিয়ম জানার জন্য একাধিক বই পড়তে পারেন। অথবা যাঁরা পড়তে পারেন না, তাঁরা হজে গেছেন এমন লোকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করুন। হজের কোনো বিষয়ে বিভিন্নতা দেখলে ঝগড়া করবেন না। আপনি যেই আলেমের ইলম ও তাকওয়ার ওপর আস্থা রাখেন, তাঁর সমাধান অনুযায়ী আমল করবেন, তবে সেমতে আমল করার জন্য অন্য কাউকে বাধ্য করবেন না। আর হজে যাওয়ার জন্য পরিচিত অথবা এলাকার দলনেতার (গ্রুপ লিডার) সঙ্গে আলাপ করতে পারেন।
বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়-দুভাবে হজ করতে যাওয়া যায়।
হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ করা দরকার, যেমন-
১· পিলগ্রিম পাস, টিকিট, ডলার কেনা,
২· পিলগ্রিম পাস, ভিসা, টাকা রাখার জন্য গলায় ঝোলানো ছোট ব্যাগ,
৩· ইহরামের কাপড় কমপক্ষে দুই সেট (প্রতি সেটে শরীরের নিচের অংশে পরার জন্য আড়াই হাত বহরের আড়াই গজ এক টুকরা কাপড় আর গায়ের চাদরের জন্য একই বহরের তিন গজ কাপড়। ইহরামের কাপড় হবে সাদা। সুতি হলে ভালো হয়),
৪· নরম ফিতাওয়ালা স্পঞ্জের স্যান্ডেল,
৫· ইহরাম পরার কাজে ব্যবহারের জন্য বেল্ট,
৬· গামছা, তোয়ালে,
৭· লুঙ্গি, গেঞ্জি, পায়জামা, পাঞ্জাবি-আপনি যে পোশাক পরবেন,
৮· সাবান, পেস্ট, ব্রাশ, মিসওয়াক,
৯· নখ কাটার যন্ত্র, সুই-সুতা,
১০· থালা, বাটি, গ্লাস, (ম্যালামাইন হলে ভালো হয়)
১১· হজের বই, কোরআন শরিফ, ধর্মীয় পুস্তক,
১২· কাগজ-কলম, ডায়েরী
১৩· শীতের কাপড় (মদিনায় ঠান্ডা পড়ে বেশি),
১৪· প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, চশমা ব্যবহার করলে অতিরিক্ত একটি চশমা (ভিড় বা অন্য কোনো কারণে ভেঙে গেলে ব্যবহারের জন্য),
১৫· বাংলাদেশি টাকা (দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার জন্য),
১৬· নারীদের জন্য বোরকা,
১৭· মালপত্র নেওয়ার জন্য ব্যাগ অথবা সুøটকেস (তালাচাবিসহ); ব্যাগের ওপর ইংরেজিতে নিজের নাম-ঠিকানা, ফোন নম্বর লিখতে হবে। এ ছাড়া আপনার প্রয়োজনীয় মালপত্র সঙ্গে নেবেন।
বি:দ্র: ডাক্তারের প্রিসক্রিপসন অবশ্বয় সঙ্গে নিতে হবে।
খাওয়া নিয়ে হজ্ব গাইডের সাথে কোন প্রকার খারাপ ব্যবহার করবেন না। সব সময় আল্লাহর উপর আস্থা রাখতে হবে।
ঢাকার আশকোনায় অবস্থিত হাজি ক্যাম্পে টিকা দেওয়া, হজের প্রশিক্ষণ, বৈদেশিক মুদ্রা কেনাসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিস পাওয়া যায়।
হজ করতে যাচ্ছেন-যাত্রার শুরুতে নিজেকে এমনভাবে তৈরি করে নিন, যেন দেহ-মনে কোনো কষ্ট না থাকে। ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে হজ হলো দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত এবং শ্রমসাধ্য ব্যাপার।
আপনার মালপত্র হালকা রাখুন, কারণ আপনার মাল আপনাকেই বহন করতে হবে। আপনার সঙ্গীদের সম্মান করুন, তাঁদের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকৃত ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনার দলে (গ্রুপে) দুর্বল বয়স্কদের প্রতি খেয়াল রাখবেন। সৌদি আরবে গিয়ে বিভিন্ন ওয়াক্তের নামাজ হারাম শরিফে জামাতে আদায় করার চেষ্টা করবেন (অনেকে বাসায় অথবা মহল্লার মসজিদে নামাজ আদায় করেন)। যাত্রার শুরুতে ভালো সফরসঙ্গী খুঁজে নেবেন, যাতে নামাজ পড়তে ও বাসায় চলাফেরায় একে অন্যের সাহায্য নিতে পারেন।
আপনি হজের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে যাচ্ছেন; সেখানকার মানুষ আরবি ভাষায় কথা বলে, রাস্তাঘাট আপনার অচেনা। কিন্তু হজযাত্রীদের খেদমত বা সেবা করার জন্য সৌদি আরব ও বাংলাদেশ সরকার নানা রকম ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।
ঢাকার হাজি ক্যাম্প
হাজি ক্যাম্পে যত দিন অবস্থান করবেন, আপনার মালপত্র খেয়াল রাখবেন। একদল সুযোগসন্ধানী লোক মালপত্র চুরি করে।
কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন নেওয়া বাকি থাকলে অবশ্যই তা নিয়ে নিন।
বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে নিন।
জেনে নিন আপনার গন্তব্য ঢাকা থেকে মক্কায়, নাকি মদিনায়। যদি মদিনায় হয়, তাহলে এখন ইহরাম বাঁধা নয়; যখন মদিনা থেকে মক্কায় যাবেন, তখন ইহরাম পরতে হবে। বেশির ভাগ হজযাত্রী আগে মক্কা যান। যদি মক্কা যেতে হয়, তাহলে ঢাকা থেকে বিমানে ওঠার আগে ইহরাম বাঁধা ভালো। কারণ, জেদ্দা পৌঁছানোর আগেই ইয়ালামলাম মিকাত বা ইহরাম বাঁধার নির্দিষ্ট স্থান। বিমানে যদিও ইহরাম বাঁধার কথা বলা হয়, কিন্তু ওই সময় অনেকে ঘুমিয়ে থাকেন; আর বিমানে পোশাক পরিবর্তন করাটাও দৃষ্টিকটু। বিনা ইহরামে মিকাত পার হলে এ জন্য দম বা কাফফারা দিতে হবে। তদুপরি গুনাহ হবে।
ইহরাম ছাড়া মিকাত অতিক্রম নিষিদ্ধ। হজ বা উমরাহ পালনকারী ব্যক্তির জন্য বিনা ইহরামে যে স্থান অতিক্রম করা জায়েজ নয়, তা-ই হলো মিকাত। বায়তুল্লাহ বা আল্লাহর ঘরের সম্মানার্থে প্রত্যেককে নিজ নিজ মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধতে হয় (মিকাত পাঁচটি-১· যুল হুলায়ফা বা বীরে আলীঃ মদিনাবাসী মক্কায় প্রবেশের মিকাত, ২· ইয়ালামলামঃ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থেকে জেদ্দা হয়ে মক্কা প্রবেশের মিকাত। ৩· আল-জুহফাঃ সিরিয়া, মিসর এবং সেদিক থেকে আগতদের জন্য মিকাত। ৪· কারনুল মানাজিল বা আসসায়েল আল-কাবিরঃ নাজদ থেকে আগতদের জন্য মিকাত এবং ৫· যাতু ইর্কঃ ইরাক থেকে আগতদের জন্য মিকাত)।
ঢাকা বিমানবন্দর
উড্ডয়নের সময় অনুযায়ী বিমানবন্দরে পৌঁছান। আপনার নাম-ঠিকানা লেখা ব্যাগ বা সুটকেসে কোনো পচনশীল খাবার রাখবেন না। বিমানবন্দরে লাগেজে যে মাল দেবেন, তা ঠিকমতো বাঁধা হয়েছে কি না, দেখে নেবেন। বিমানের কাউন্টারে মাল রেখে এর টোকেন দিলে তা যত্ন করে রাখবেন। কারণ, জেদ্দা বিমানবন্দরে ওই টোকেন দেখালে সেই ব্যাগ আপনাকে ফেরত দেবে। ইমিগ্রেশন, চেকিংয়ের পর নিজ মালপত্র যত্নে রাখুন।
বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র, পিলগ্রিম পাস, বিমানের টিকিট, টিকা দেওয়ার কার্ড, অন্য কাগজপত্র, টাকা, বিমানে পড়ার জন্য ধর্মীয় বই ইত্যাদি গলায় ঝোলানোর ব্যাগে যত্নে রাখুন।
সময়মতো বিমানে উঠে নির্ধারিত আসনে বসুন।
জেদ্দা বিমানবন্দর
মোয়াল্লেমের গাড়ি আপনাকে জেদ্দা থেকে মক্কায় যে বাড়িতে থাকবেন, সেখানে নামিয়ে দেবে। মোয়াল্লেমের নম্বর (আরবিতে লেখা) কব্জি বেল্ট দেওয়া হবে, তা হাতে পরে নেবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র (যাতে পিলগ্রিম পাস নম্বর, নাম, ট্রাভেল এজেন্টের নাম ইত্যাদি থাকবে) গলায় ঝোলাবেন।
জেদ্দা থেকে মক্কায় পেঁৗছাতে দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। চলার পথে তালবিয়া পড়ুন (লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক···)।
মক্কায় পৌঁছে
মক্কায় পৌঁছে আপনার থাকার জায়গায় মালপত্র রেখে ক্লান্ত থাকলে বিশ্রাম করুন। আর যদি নামাজের ওয়াক্ত হয়, নামাজ আদায় করুন। বিশ্রাম শেষে দলবদ্ধভাবে উমরাহর নিয়ত করে থাকলে উমরাহ পালন করুন।
মসজিদুল হারামে (কাবা শরিফ) অনেকগুলো প্রবেশপথ আছে; সব কটি দেখতে একই রকম। কিন্তু প্রতিটি প্রবেশপথে আরবি ও ইংরেজিতে ১, ২, ৩ নম্বর ও প্রবেশপথের নাম আছে, যেমন-বাদশা আবদুল আজিজ প্রবেশপথ। আপনি আগে থেকে ঠিক করবেন, কোন প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকবেন বা বের হবেন। আপনার সফরসঙ্গীকেও স্থান চিনিয়ে দিন। তিনি যদি হারিয়ে যান, তাহলে নির্দিষ্ট নম্বর গেটের সামনে থাকবেন। এতে ভেতরে ভিড়ে হারিয়ে গেলেও নির্দিষ্ট স্থানে এসে সঙ্গীকে খুঁজে পাবেন।
কাবা শরিফে স্যান্ডেল রাখার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকবেন, নির্দিষ্ট স্থানে জুতা রাখার জায়গায় রাখুন। এখানে-সেখানে জুতা রাখলে পরে আর খঁুজে পাবেন না। প্রতিটি জুতা রাখার র্যাকেও নম্বর দেওয়া আছে। এই নম্বর মনে রাখুন।
উমরাহর নিয়মকানুন আগে জেনে নেবেন, যেমন-সাতবার তাওয়াফ করা, জমজমের পানি পান করা, নামাজ আদায় করা, সাঈ করা (সাফা-মারওয়া পাহাড়ে দৌড়ানো-যদিও মসৃণ পথ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত), মাথা মুন্ডানো অথবা চুল ছোট করা-এসব কাজ ধারাবাহিকভাবে করা। ওয়াক্তীয় নামাজের সময় হলে যতটুকু হয়েছে ওই সময় নামাজ পড়ে আবার বাকিটুকু শেষ করা।
কাবা শরিফ
কাবা শরিফে প্রবেশ করার সময় বিসমিল্লাহ ও দরুদ শরিফ পড়ার পর আল্লাহুম মাফ তাহলি আব-ওয়া-বা রাহমাতিকা পড়বেন। মসজিদুল হারামে কোনো নারীর পাশে অথবা তাঁর পেছনে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা উচিত নয়।
কোনো দরজার সামনে নামাজ পড়া ঠিক নয়, এতে পথচারীর কষ্ট হয়।
হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়া সুন্নত। তবে ভিড়ের কারণে না পারলে দূর থেকে চুমুর ইশারা করলেই চলবে। ভিড়ে অন্যকে কষ্ট দেওয়া যাবে না।
উমরাহ ও হজ পালন
উমরাহ হল (হারামের সীমানার বাইরে মিকাতের ভেতরের স্থান) থেকে অথবা মিকাত থেকে ইহরাম বেঁধে বায়তুল্লাহ শরিফ তাওয়াফ করা, সাফা-মারওয়া সাঈ করা এবং মাথার চুল ফেলে দেওয়া বা ছোট করাকে উমরাহ বলে।
হজ তিন প্রকার-
(ক) তামাত্তু,
(খ)কিরান
(গ) ইফরাদ।
হজ্বে তামাত্তু
হজের মাস সমূহে (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ) উমরাহর নিয়তে ইহরাম করে, উমরাহ পালন করে, পরে হজের নিয়ত করে হজ পালন করাকে হজে তামাত্তু বলে।
হজ্বে কিরান
হজের মাসসমূহে একই সঙ্গে হজ ও উমরাহ পালনের নিয়তে ইহরাম করে উমরাহ ও হজ করাকে হজে কিরান বলে।
হজ্বে ইফরাদ
শুধু হজ পালনের উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধে হজ সম্পাদনকে হজে ইফরাদ বলে।
তামাত্তু হজের নিয়ম
১· উমরাহর ইহরাম (ফরজ)
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সেরে গোসল বা অজু করে নিন।
মিকাত অতিক্রমের আগেই সেলাইবিহীন একটি সাদা কাপড় পরিধান করুন, আরেকটি গায়ে জড়িয়ে নিয়ে ইহরামের নিয়তে দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিন।
শুধু উমরাহর নিয়ত করে এক বা তিনবার তালবিয়া পড়ে নিন।
তালবিয়া হলো-লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নিমাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।
২· উমরার তাওয়াফ (ফরজ)
অজুর সঙ্গে ইজতিবাসহ তাওয়াফ করুন। ইহরামের চাদরকে ডান বগলের নিচের দিক থেকে পেঁচিয়ে এনে বাঁ কাঁধের ওপর রাখাকে ইজতিবা বলে।
হাজরে আসওয়াদকে সামনে রেখে তার বরাবর ডান পাশে দাঁড়ান (২০০৬ সাল থেকে মেঝেতে সাদা মার্বেল পাথর আর ডান পাশে সবুজ বাতি)। তারপর দাঁড়িয়ে তাওয়াফের নিয়ত করুন। তারপর ডানে গিয়ে এমনভাবে দাঁড়াবেন, যেন হাজরে আসওয়াদ পুরোপুরি আপনার সামনে থাকে। এরপর দুই হাত কাঁধ পর্যন্ত তুলে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর, লা ইলাহা ইল্লাল লা-হু ওয়া লিল্লাহিল হামদ, ওয়াস সালাতু ওয়াস-সালামু আলা রাসুলিল্লাহ পড়ুন। পরে হাত ছেড়ে দিন এবং হাজরে আসওয়াদের দিকে হাত দিয়ে ইশারা করে হাতের তালুতে চুমু খেয়ে ডান দিকে চলতে থাকুন, যাতে পবিত্র কাবাঘর পূর্ণ বাঁয়ে থাকে। পুরুষের জন্য প্রথম তিন চক্করে রমল করা সুন্নত । রমল অর্থ বীরের মতো বুক ফুলিয়ে কাঁধ দুলিয়ে ঘন ঘন কদম রেখে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলা।
রুকনে ইয়ামানিকে সম্ভব হলে শুধু হাতে স্পর্শ করুন। রুকনে ইয়ামানিতে এলে রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়াকিনা আযাবান্নার, ওয়াদখিলনাল জান্নাতা মাআল আবরার, ইয়া আযিযু ইয়া গাফফার, ইয়া রাব্বাল আলামিন বলুন। চুমু খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। অতঃপর হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত এসে চক্কর পুরো করুন।
পুনরায় হাজরে আসওয়াদ বরাবর দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে ইশারা করে হাতের তালুতে চুমু খেয়ে দ্বিতীয় চক্কর শুরু করুন। এভাবে সাত চক্করে তাওয়াফ শেষ করুন।
হাতে সাত দানার তসবি অথবা গণনাযন্ত্র রাখতে পারেন । তাহলে সাত চক্কর ভুল হবে না।
৩· তাওয়াফের দুই রাকাত নামাজ (ওয়াজিব)
মাকামে ইবরাহিমের পেছনে বা হারামের যেকোনো স্থানে তাওয়াফের নিয়তে (মাকরুহ সময় ছাড়া) দুই রাকাত নামাজ পড়ে দোয়া করুন। মনে রাখবেন, এটা দোয়া কবুলের সময়।
৪· উমরাহর সাঈ (ওয়াজিব)
সাফা পাহাড়ের কিছুটা ওপরে উঠে (এখন আর পাহাড় নেই, মেঝেতে মার্বেল পাথর, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত) কাবা শরিফের দিকে মুখ করে সাঈ-এর নিয়ত করে, দোয়ার মতো করে হাত তুলে তিনবার তাকবির বলে দোয়া করুন। তারপর মারওয়ার দিকে রওনা হয়ে দুই সবুজ দাগের মধ্যে (এটা সেই জায়গা, যেখানে হজরত হাজেরা (রা·) পানির জন্য দৌড়েছিলেন) একটু দ্রুত পথ চলে মারওয়ায় পেঁৗছালে এক চক্কর পূর্ণ হলো। মারওয়া পাহাড়ে উঠে কাবা শরিফের দিকে মুখ করে দোয়ার মতো করে হাত তুলে তাকবির পড়ুন এবং আগের মতো চলে সেখান থেকে সাফায় পেঁৗছালে দ্বিতীয় চক্কর পূর্ণ হলো এভাবে সপ্তম চক্করে মারওয়ায় গিয়ে সাঈ শেষ করে দোয়া করুন।
৫· হলক করা (ওয়াজিব)
পুরুষ হলে রাসুলুল্লাহ (সা·)-এর আদর্শের অনুসরণে সম্পূর্ণ মাথা মুণ্ডন করবেন, তবে মাথার চুল ছাঁটতেও পারেন। মহিলা হলে চুলের মাথা এক ইঞ্চি পরিমাণ কাটবেন।
এ পর্যন্ত উমরাহর কাজ শেষ।
হজের ইহরাম না বাঁধা পর্যন্ত ইহরামের আগের মতো সব কাজ করতে পারবেন।
৬· হজের ইহরাম (ফরজ)
হারাম শরিফ বা বাসা থেকে আগের নিয়মে শুধু হজের নিয়তে ইহরাম বেঁধে ৮ জিলহজ জোহরের আগেই মিনায় পৌঁছে যাবেন।
৭· মিনায় অবস্থান (সুন্নত)
৮ জিলহজ জোহর থেকে ৯ জিলহজ ফজরসহ মোট পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিনায় আদায় করুন এবং এ সময়ে মিনায় অবস্থান করুন।
৮· আরাফাতের ময়দানে অবস্থান (ফরজ)
আরাফাতের ময়দানে অবস্থান হজের অন্যতম ফরজ।
৯ জিলহজ দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করুন। এদিন নিজ তাঁবুতে জোহর ও আসরের নামাজ স্ব স্ব সময়ে আলাদাভাবে আদায় করুন। মুকিম হলে চার রাকাত পূর্ণ পড়ুন। মসজিদে নামিরায় উভয় নামাজ জামাতে পড়লে একসঙ্গে আদায় করতে পারেন। যদি ইমাম মুসাফির হন আর মসজিদে নামিরা যদি আপনার কাছ থেকে দূরে থাকে, তাহলে সেখানে অবস্থান করবেন। মাগরিবের নামাজ না পড়ে মুজদালিফার দিকে রওনা হোন।
৯· মুজদালিফায় অবস্থান (সুন্নত)
আরাফায় সূর্যাস্তের পর মুজদালিফায় গিয়ে এশার সময়ে মাগরিব ও এশা এক আজান ও এক ইকামতে একসঙ্গে আদায় করুন।
এখানেই রাত যাপন করুন (এটি সুন্নত) এবং ১০ জিলহজ ফজরের পর সূর্যোদয়ের আগে কিছু সময় মুজদালিফায় অবশ্যই অবস্থান করুন (এটি ওয়াজিব)। তবে দুর্বল (অপারগ) ও নারীদের বেলায় এটা অপরিহার্য নয়। রাতে ছোট ছোট ছোলার দানার মতো ৭০টি কঙ্কর সংগ্রহ করুন। মুজদালিফায় কঙ্কর খুব সহজেই পেয়ে যাবেন।
১০· কঙ্কর মারা (প্রথম দিন)
১০ জিলহজ ফজর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত শুধু বড় জামারাকে (বড় শয়তান) সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করুন (ওয়াজিব)। এ সময়ে সম্ভব না হলে এ রাতের শেষ পর্যন্ত কঙ্কর মারতে পারেন। দুর্বল ও নারীদের জন্য রাতেই কঙ্কর মারা উত্তম ও নিরাপদ।
কঙ্কর মারার স্থানে বাংলা ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়; তা মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং মেনে চলুন।
১১· কোরবানি করা (ওয়াজিব)
১০ জিলহজ কঙ্কর মারার পরই কেবল কোরবানি নিশ্চিত পন্থায় আদায় করুন।
কোরবানির পরেই কেবল রাসুলুল্লাহ (সা·)-এর আদর্শের অনুসরণে মাথা হলক করুন (ওয়াজিব)। তবে চুল ছোটও করতে পারেন।
খেয়াল রাখবেনঃ কঙ্কর মারা, কোরবানি করা ও চুল কাটার মধ্যে ধারাবাহিকতা জরুরি ও ওয়াজিব; অন্যথায় দম বা কাফফারা দিয়ে হজ শুদ্ধ করতে হবে। বর্তমানে এই সমস্যা সমাধানের সহজ উপায় হজে ইফরাদ করা। যেখানে কোরবানি নেই। হজের পরে উমরাহ করা যায়।
১২· তাওয়াফে জিয়ারত (ফরজ)
১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগেই তাওয়াফে জিয়ারত করে নিতে হবে। তা না হলে ১২ জিলহজের পরে তাওয়াফটি করে দম দিতে হবে। তবে নারীরা প্রাকৃতিক কারণে করতে না পারলে পবিত্র হওয়ার পরে করবেন।
১৩· কঙ্কর মারা (ওয়াজিব)
১১ ও ১২ জিলহজ কঙ্কর মারা (ওয়াজিব)। ১১-১২ জিলহজ দুপুর থেকে সময় আরম্ভ হয়। ভিড় এড়ানোর জন্য আসরের পর অথবা আপনার সুবিধাজনক সময়ে সাতটি করে কঙ্কর মারবেন-প্রথমে ছোট, মধ্যম, তারপর বড় শয়তানকে। ছোট জামারা থেকে শুরু করে বড় জামারায় শেষ করুন। সম্ভব না হলে শেষরাত পর্যন্ত মারতে পারেন। দুর্বল ও নারীদের জন্য রাতেই নিরাপদ।
১৪· মিনা ত্যাগ
১৩ জিলহজ মিনায় না থাকতে চাইলে ১২ জিলহজ সন্ধ্যার আগে অথবা সন্ধ্যার পর ভোর হওয়ার আগে মিনা ত্যাগ করুন। সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করতেই হবে-এটা ঠিক নয়। তবে সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করা উত্তম।
১৫· বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব)
বাংলাদেশ থেকে আগত হজযাত্রীদের হজ শেষে বিদায়ী তাওয়াফ করতে হয় (ওয়াজিব)। তবে হজ শেষে যেকোনো নফল তাওয়াফই বিদায়ী তাওয়াফে পরিণত হয়ে যায়।
নারীদের মাসিকের কারণে বিদায়ী তাওয়াফ করতে না পারলে কোনো ক্ষতি নেই; দম বা কাফফারাও দিতে হয় না।
১৬· মিনায় অবস্থানরত দিনগুলোতে (১০, ১১ জিলহজ) মিনাতেই রাত যাপন করুন। আর ১২ তারিখ রাত যাপন করুন যদি ১৩ তারিখ রমি (কঙ্কর ছুড়ে মারা) শেষ করে ফিরতে চান (সুন্নত)।
কিরান হজের নিয়ম
কিরান হজের নিয়ম
১· ইহরাম বাঁধা (ফরজ)
জেদ্দা পৌঁছানোর আগে একই নিয়মে ইহরাম করার কাজ সমাপ্ত করুন। তবে তালবিয়ার আগেই হজ ও উমরাহ উভয়ের নিয়ত একসঙ্গে করুন।
২· উমরাহর তাওয়াফ (পূর্বে বর্ণিত) নিয়মে আদায় করুন (ওয়াজিব)।
৩· উমরাহর সাঈ করুন, তবে এরপর চুল ছাঁটবেন না; বরং ইহরামের সব বিধিবিধান মেনে চলুন (ওয়াজিব)।
৪· তাওয়াফে কুদুম করুন (সুন্নত)।
৫· এরপর সাঈ করুন, যদি এ সময় সাঈ করতে না পারা যায় তাওয়াফে জিয়ারতের পরে করুন (ওয়াজিব)।
৬· আট জিলহজ জোহর থেকে ৯ জিলহজ ফজর পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিনাতে পড়ুন। এ সময়ে মিনাতে অবস্থান করুন (সুন্নত)।
৭· আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করুন (ফরজ)।
৮· নয় জিলহজ সূর্যাস্তের পর থেকে মুজদালিফায় অবস্থান এবং মাগরিব ও এশা একসঙ্গে এশার সময়ে আদায় করুন (সুন্নত)। তবে ১০ জিলহজ ফজরের পর কিছু সময় অবস্থান করুন (ওয়াজিব)।
৯· ওপরে বর্ণিত নিয়ম ও সময় অনুসারে ১০ জিলহজ কঙ্কর নিক্ষেপ করুন (ওয়াজিব)।
১০· কোরবানি করুন (ওয়াজিব)।
১১· মাথার চুল মুণ্ডন করে নিন (ওয়াজিব)। তবে চুল ছেঁটেও নিতে পারেন।
১২· তাওয়াফে জিয়ারত করুন (ফরজ) এবং সাঈ করে নিন, যদি তাওয়াফে কুদুমের পরে না করে থাকেন।
১৩· এগারো-বারো জিলহজ কঙ্কর নিক্ষেপ করুন (ওয়াজিব)। ১৩ জিলহজ কঙ্কর মারা রাসুলুল্লাহ (সা·)-এর আদর্শ।
১৪· মিনায় থাকাকালীন মিনাতেই রাত যাপন করুন (সুন্নত)।
১৫· মিকাতের বাইরে থেকে আগত হাজিরা বিদায়ী তাওয়াফ করুন (ওয়াজিব)।
ইফরাদ হজের নিয়ম
১· শুধু হজের নিয়তে (আগে বর্ণিত) ইহরাম বাঁধুন (ফরজ)।
২· মক্কা শরিফ পেঁৗছে তাওয়াফে কুদুম করুন (সুন্নত)।
৩· সাঈ করুন (ওয়াজিব)। এ সময়ে সম্ভব না হলে সাঈ তাওয়াফে জিয়ারতের পরে করুন।
৪· মিনায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও রাত যাপন করুন (সুন্নত)।
৫· আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করুন (ফরজ)।
৬· মুজদালিফায় অবস্থান করুন (সুন্নত)। তবে ১০ জিলহজ ফজরের পর কিছু সময় অবস্থান ওয়াজিব।
৭· ১০ জিলহজে জামারাতে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করুন (ওয়াজিব)।
৮· যেহেতু এ হজে কোরবানি ওয়াজিব নয়, তাই কঙ্কর নিক্ষেপের পর মাথা হলক করে নিন; তবে চুল ছেঁটেও নিতে পারেন (ওয়াজিব)।
৯· তাওয়াফে জিয়ারত করুন (ফরজ) এবং যদি তাওয়াফে কুদুমের পর সাঈ না করে থাকেন, তাহলে সাঈ করে নিন (ওয়াজিব)।
১০· ১১-১২ জিলহজ আগে বর্ণিত নিয়ম ও সময়ে কঙ্কর নিক্ষেপ করুন (ওয়াজিব)।
১১· বদলি হজকারী ইফরাদ হজ করবেন।
ইহরাম, অন্যান্য পরামর্শ ও মক্কায় যা দ
ইহরাম সম্পর্কে জরুরি বিষয়
যাঁরা সরাসরি বাংলাদেশ থেকে মক্কা শরিফ যাবেন, তাঁরা বাড়িতে, হাজি ক্যাম্পে বা বিমানে ইহরাম করে নেবেন। বাড়িতে বা হাজি ক্যাম্পে ইহরাম করে নেওয়া সহজ। ইহরাম ছাড়া যেন মিকাত অতিক্রম না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
যাঁরা মদিনা শরিফ যাবেন, তাঁরা মদিনা শরিফ থেকে মক্কা যাওয়ার সময় ইহরাম করবেন। কোনো নারী প্রাকৃতিক কারণে অপবিত্র হয়ে থাকলে ইহরামের প্রয়োজন হলে অজু-গোসল করে নামাজ ব্যতীত লাব্বাইক পড়ে ইহরাম করে নেবেন। তাওয়াফ ছাড়া হজ, উমরাহর সমস্ত কাজ নির্ধারিত নিয়মে আদায় করবেন।
তাওয়াফ ও সাঈ করার সময় বিশেষভাবে লক্ষণীয়
তাওয়াফের সময় অজু থাকা জরুরি। তবে সাঈ করার সময় অজু না থাকলেও সাঈ সম্পন্ন হয়ে যাবে।
হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়া একটি সুন্নত। তা আদায় করতে গিয়ে লোকজনকে ধাক্কাধাক্কির মাধ্যমে কষ্ট দেওয়া বড় গুনাহ। তাই তাওয়াফকালে বেশি ভিড় দেখলে ইশারায় চুমু দেবেন।
সাঈ করার সময় সাফা থেকে মারওয়া কিংবা মারওয়া থেকে সাফা প্রতিটি ভিন্ন ভিন্ন চক্কর। এভাবে সাতটি চক্কর সম্পূর্ণ হলে একটি সাঈ পূর্ণ হবে।
অন্যান্য পরামর্শ
সৌদি আরবে অবস্থানকালে কোনো চাঁদা ওঠানো, সাহায্য চাওয়া, ভিক্ষা করা দণ্ডনীয় অপরাধ। সুতরাং এগুলো থেকে বিরত থাকুন।
সৌদি আরবে অবস্থানকালে ট্রাফিক আইন মেনে চলুন, সিগন্যাল পড়লে রাস্তা পার হোন। রাস্তা পার হওয়ার সময় অবশ্যই ডানে-বাঁয়ে দেখেশুনে সাবধানে পার হবেন। কখনো দৌড় দেবেন না।
কাবা শরিফ ও মসজিদে নববীর ভেতরে কিছুদূর পরপর পবিত্র কোরআন মজিদ রাখা আছে আর পাশে জমজম পানি (স্বাভাবিক ও ঠান্ডা) খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
মনে রাখবেন, মসজিদে নববী ও হারামের সীমানার মধ্যে ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
শরীরের কোনো স্থান কেটে গেলে অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম ব্যবহার করুন এবং ক্ষতস্থানটি প্লাস্টার কিংবা ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে দিন।
হাঁচি কিংবা কাশি দেওয়ার সময় অবশ্যই আপনার মুখ ঢেকে নিন।
হজযাত্রীদের যাবতীয় তথ্য, দেশের পরিবার-পরিজনের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে সংবাদ পৌঁছানো যায়। হারানো হজযাত্রীদের খুঁজে পাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশ হজ মিশনে অবস্থিত হাতিল আইটি ইনফরমেশন সার্ভিসেস সাহায্য করে।
কোনো ধরনের অসুস্থতা কিংবা দুর্ঘটনায় পড়লে বাংলাদেশ হজ মিশনের মেডিকেল সদস্যদের (চিকিৎসক) সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
হজের সময় হজযাত্রীদের যেন কোনো রকম কষ্ট না হয়। আপনার ট্রাভেল এজেন্সি আপনাকে যথাযথ সুবিধাদি (দেশ থেকে আপনাকে থাকা, খাওয়াসহ অন্য যেসব সুবিধার কথা বলেছিল) না দিলে আপনি মক্কা ও মদিনার বাংলাদেশ হজ মিশনকে জানাতে পারেন। এতেও আপনি সন্তুষ্ট না থাকলে সৌদির ওজারাতুল হজকে (হজ মন্ত্রণালয়) লিখিত অভিযোগ করতে পারেন।
মক্কায় যা দেখবেন
মসজিদুল হারাম (কাবা শরিফ)।
সাফা ও মারওয়া।
মসজিদুল হারামের পূর্ব দিকে সাফা-মারওয়া পাহাড় পার হয়ে বাইরে গেলে পথের পাশে দোতলা একটি দালানে মক্কা লাইব্রেরি।
কয়েকটি বিশিষ্ট স্থানের পরিচয়
মাতাফঃ কাবাঘরের চারদিকে অবস্থিত তওয়াফের স্থানকে মাতাফ বা চত্বর বলা হয়।
হাজরে আসওয়াদ বা কালো পাথরঃ কাবা শরিফের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে লাগানো আছে একটি কালো পাথর, এটিই হাজরে আসওয়াদ। মুসলমানদের কাছে এই পাথর অতি মূল্যবান ও পবিত্র। তাদের কাছে এটি বেহেশতি পাথর, তাই এতে চুমু দেওয়ার ফজিলতও বেশি। হাজরে আসওয়াদ তাওয়াফ (কাবা শরিফ সাতবার চক্কর দেওয়া) শুরুর স্থান। প্রতিবার চক্কর দেওয়ার সময় এই হাজরে আসওয়াদে চুমু দিতে হয়। ভিড়ের কারণে না পারলে চুমুর ইশারা করলেও চলে-এটাই নিয়ম।
কাবাঘরঃ কাবাঘর প্রায় বর্গাকৃতির। এর র্দৈঘ্য ও প্রস্থ যথাক্রমে আনুমানিক ৪৫ ও ৪০ ফুট। কাবা শরিফের দরজা একটি এবং দরজাটি কাবাঘরের পূর্ব দিকে অবস্থিত।
মিযাবে রহমতঃ বায়তুল্লাহর উত্তর দিকের ছাদে (হাতিমের মাঝ বরাবর) যে নালা বসানো আছে, তাকে মিযাবে রহমত বলা হয়। এই নালা দিয়ে ছাদের বৃষ্টির পানি পড়ে।
মাকামে ইবরাহীমঃ কাবা শরিফের পাশেই আছে ক্রিস্টালের একটি বাক্স, চারদিকে লোহার বেষ্টনী। ভেতরে বর্গাকৃতির একটি পাথর। পাথরটির দৈর্ঘø, প্রস্থ ও উচ্চতা সমান, প্রায় এক হাত। এ পাথরটিই মাকামে ইবরাহীম। মাকাম শব্দের একটি অর্থ হচ্ছে দাঁড়ানোর স্থান। অর্থাৎ হজরত ইবরাহীম (আ·) এর দাঁড়ানোর স্থান।
হাতিমঃ কাবাঘরের উত্তর দিকে অর্ধবৃত্তাকার মানুষ-সমান উঁচু প্রাচীরে ঘেরা একটি স্থান।
জান্নাতুল মুআল্লাঃ মসজিদুল হারামের পূর্ব দিকে মক্কা শরিফের বিখ্যাত কবরস্থান।
গারে হেরাঃ মক্কার সর্বাধিক উচ্চ পাহাড়ের একটি নির্জন স্থান। এখানে নবী করিম (সা·) ধ্যানমগ্ন থাকতেন এবং এখানেই সর্বপ্রথম ওহি নাজিল হয়।
গারে সাওরঃ মসজিদুল হারামের পশ্চিমে হিজরতের সময় এই প্রকাণ্ড সুউচ্চ পাহাড়ে রাসুলুল্লাহ (সা·) তিন দিন অবস্থান করেছিলেন।
জাবাল-ই-রহমতঃ আরাফাতের ময়দানে অবস্থিত। এ পাহাড়ে সর্বপ্রথম নবী হজরত আদম (আ·) এর দোয়া কবুল হয়। এখানে তিনি বিবি হাওয়া (আ·) এর সাক্ষাৎ পান। ইসলামের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা·) বিদায় হজের খুতবাও এখান থেকেই দিয়েছিলেন।
জমজম কূপঃ দুনিয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের যত অনুপম নিদর্শন আছে, তার মধ্যে মক্কা শরিফে অবস্থিত জমজম কূপ অন্যতম। জমজম কূপের ইতিহাস কমবেশি সবারই জানা। এ কূপের পানি সর্বাধিক স্বচ্ছ, উৎকৃষ্ট, পবিত্র ও বরকতময়। এ পানি শুধু পিপাসাই মেটায় না; এতে ক্ষুধাও নিবৃত্ত হয়। এ সম্পর্কে রাসুলে করিম (সা·) বাণী প্রদান করেছেন, এ পানি শুধু পানীয় নয়; বরং খাদ্যের অংশ এবং এতে পুষ্টি রয়েছে।
হজ পালন করতে গিয়ে মক্কায় কিসওয়া তৈরির কারখানা দেখে আসতে পারেন। ট্যাক্সিতে কাবা শরিফ থেকে ১০ রিয়ালে পেঁৗছে যাবেন কিসওয়া। পাশেই মক্কা-মদিনার দুই হারাম শরিফে ব্যবহূত জাদুঘর। জাদুঘরে দেখতে পাবেন বিভিন্ন রকম কিসওয়া (কাবার গিলাফ)। সেখানে অনেক বাংলাদেশি চাকরি করেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে আরও অনেক কিছু জানতে পারবেন।
আরও কিছু করণীয়
আরও কিছু করণীয়
আরাফাতের ময়দানে অনেক প্রতিষ্ঠান বিনা মূল্যে খাবার, জুস, ফল ইত্যাদি দিয়ে থাকে। ওই সব খাবার আনতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কি হয়, তাই সাবধান থাকবেন।
মুজদালিফায় রাতে
www.facebook.com/hafej.minhaz.1
লেবেলসমূহ:
তাফসীরুল কোরান,
দেওবন্দ ইতিহাস,
হজ্জ
হজ্জের যাবতীয় নিয়ম-কানুন
মিনহাজ উদ্দীন
হজে যাচ্ছেন, আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করুন-হে আল্লাহ! আমার হজ্বকে সহজ করে দাও, কবুল করো-দেখবেন, আপনার যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। হজের দীর্ঘ সফরে ধৈর্য ধারন করতে হবে। সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মানসিকতা রাখবেন, তাহলে অল্পতেই বিচলিত হবেন না।
হজের প্রস্তুতিপর্বে-পিলগ্রিম পাস ( পাসপোর্ট) তৈরি করা, বিমানের টিকিট সংগ্রহ ও তারিখ নিশ্চিত করা, প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করা, ম্যানিনজাইটিস টিকা বা অন্যান্য ভ্যাকসিন দেওয়া | হজের এসব নিয়ম জানার জন্য একাধিক বই পড়তে পারেন। অথবা যাঁরা পড়তে পারেন না, তাঁরা হজে গেছেন এমন লোকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করুন। হজের কোনো বিষয়ে বিভিন্নতা দেখলে ঝগড়া করবেন না। আপনি যেই আলেমের ইলম ও তাকওয়ার ওপর আস্থা রাখেন, তাঁর সমাধান অনুযায়ী আমল করবেন, তবে সেমতে আমল করার জন্য অন্য কাউকে বাধ্য করবেন না। আর হজে যাওয়ার জন্য পরিচিত অথবা এলাকার দলনেতার (গ্রুপ লিডার) সঙ্গে আলাপ করতে পারেন।
বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়-দুভাবে হজ করতে যাওয়া যায়।
হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ করা দরকার, যেমন-
১· পিলগ্রিম পাস, টিকিট, ডলার কেনা,
২· পিলগ্রিম পাস, ভিসা, টাকা রাখার জন্য গলায় ঝোলানো ছোট ব্যাগ,
৩· ইহরামের কাপড় কমপক্ষে দুই সেট (প্রতি সেটে শরীরের নিচের অংশে পরার জন্য আড়াই হাত বহরের আড়াই গজ এক টুকরা কাপড় আর গায়ের চাদরের জন্য একই বহরের তিন গজ কাপড়। ইহরামের কাপড় হবে সাদা। সুতি হলে ভালো হয়),
৪· নরম ফিতাওয়ালা স্পঞ্জের স্যান্ডেল,
৫· ইহরাম পরার কাজে ব্যবহারের জন্য বেল্ট,
৬· গামছা, তোয়ালে,
৭· লুঙ্গি, গেঞ্জি, পায়জামা, পাঞ্জাবি-আপনি যে পোশাক পরবেন,
৮· সাবান, পেস্ট, ব্রাশ, মিসওয়াক,
৯· নখ কাটার যন্ত্র, সুই-সুতা,
১০· থালা, বাটি, গ্লাস, (ম্যালামাইন হলে ভালো হয়)
১১· হজের বই, কোরআন শরিফ, ধর্মীয় পুস্তক,
১২· কাগজ-কলম, ডায়েরী
১৩· শীতের কাপড় (মদিনায় ঠান্ডা পড়ে বেশি),
১৪· প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, চশমা ব্যবহার করলে অতিরিক্ত একটি চশমা (ভিড় বা অন্য কোনো কারণে ভেঙে গেলে ব্যবহারের জন্য),
১৫· বাংলাদেশি টাকা (দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার জন্য),
১৬· নারীদের জন্য বোরকা,
১৭· মালপত্র নেওয়ার জন্য ব্যাগ অথবা সুøটকেস (তালাচাবিসহ); ব্যাগের ওপর ইংরেজিতে নিজের নাম-ঠিকানা, ফোন নম্বর লিখতে হবে। এ ছাড়া আপনার প্রয়োজনীয় মালপত্র সঙ্গে নেবেন।
বি:দ্র: ডাক্তারের প্রিসক্রিপসন অবশ্বয় সঙ্গে নিতে হবে।
খাওয়া নিয়ে হজ্ব গাইডের সাথে কোন প্রকার খারাপ ব্যবহার করবেন না। সব সময় আল্লাহর উপর আস্থা রাখতে হবে।
ঢাকার আশকোনায় অবস্থিত হাজি ক্যাম্পে টিকা দেওয়া, হজের প্রশিক্ষণ, বৈদেশিক মুদ্রা কেনাসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিস পাওয়া যায়।
হজ করতে যাচ্ছেন-যাত্রার শুরুতে নিজেকে এমনভাবে তৈরি করে নিন, যেন দেহ-মনে কোনো কষ্ট না থাকে। ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে হজ হলো দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত এবং শ্রমসাধ্য ব্যাপার।
আপনার মালপত্র হালকা রাখুন, কারণ আপনার মাল আপনাকেই বহন করতে হবে। আপনার সঙ্গীদের সম্মান করুন, তাঁদের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকৃত ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনার দলে (গ্রুপে) দুর্বল বয়স্কদের প্রতি খেয়াল রাখবেন। সৌদি আরবে গিয়ে বিভিন্ন ওয়াক্তের নামাজ হারাম শরিফে জামাতে আদায় করার চেষ্টা করবেন (অনেকে বাসায় অথবা মহল্লার মসজিদে নামাজ আদায় করেন)। যাত্রার শুরুতে ভালো সফরসঙ্গী খুঁজে নেবেন, যাতে নামাজ পড়তে ও বাসায় চলাফেরায় একে অন্যের সাহায্য নিতে পারেন।
আপনি হজের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে যাচ্ছেন; সেখানকার মানুষ আরবি ভাষায় কথা বলে, রাস্তাঘাট আপনার অচেনা। কিন্তু হজযাত্রীদের খেদমত বা সেবা করার জন্য সৌদি আরব ও বাংলাদেশ সরকার নানা রকম ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।
ঢাকার হাজি ক্যাম্প
হাজি ক্যাম্পে যত দিন অবস্থান করবেন, আপনার মালপত্র খেয়াল রাখবেন। একদল সুযোগসন্ধানী লোক মালপত্র চুরি করে।
কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন নেওয়া বাকি থাকলে অবশ্যই তা নিয়ে নিন।
বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে নিন।
জেনে নিন আপনার গন্তব্য ঢাকা থেকে মক্কায়, নাকি মদিনায়। যদি মদিনায় হয়, তাহলে এখন ইহরাম বাঁধা নয়; যখন মদিনা থেকে মক্কায় যাবেন, তখন ইহরাম পরতে হবে। বেশির ভাগ হজযাত্রী আগে মক্কা যান। যদি মক্কা যেতে হয়, তাহলে ঢাকা থেকে বিমানে ওঠার আগে ইহরাম বাঁধা ভালো। কারণ, জেদ্দা পৌঁছানোর আগেই ইয়ালামলাম মিকাত বা ইহরাম বাঁধার নির্দিষ্ট স্থান। বিমানে যদিও ইহরাম বাঁধার কথা বলা হয়, কিন্তু ওই সময় অনেকে ঘুমিয়ে থাকেন; আর বিমানে পোশাক পরিবর্তন করাটাও দৃষ্টিকটু। বিনা ইহরামে মিকাত পার হলে এ জন্য দম বা কাফফারা দিতে হবে। তদুপরি গুনাহ হবে।
ইহরাম ছাড়া মিকাত অতিক্রম নিষিদ্ধ। হজ বা উমরাহ পালনকারী ব্যক্তির জন্য বিনা ইহরামে যে স্থান অতিক্রম করা জায়েজ নয়, তা-ই হলো মিকাত। বায়তুল্লাহ বা আল্লাহর ঘরের সম্মানার্থে প্রত্যেককে নিজ নিজ মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধতে হয় (মিকাত পাঁচটি-১· যুল হুলায়ফা বা বীরে আলীঃ মদিনাবাসী মক্কায় প্রবেশের মিকাত, ২· ইয়ালামলামঃ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থেকে জেদ্দা হয়ে মক্কা প্রবেশের মিকাত। ৩· আল-জুহফাঃ সিরিয়া, মিসর এবং সেদিক থেকে আগতদের জন্য মিকাত। ৪· কারনুল মানাজিল বা আসসায়েল আল-কাবিরঃ নাজদ থেকে আগতদের জন্য মিকাত এবং ৫· যাতু ইর্কঃ ইরাক থেকে আগতদের জন্য মিকাত)।
ঢাকা বিমানবন্দর
উড্ডয়নের সময় অনুযায়ী বিমানবন্দরে পৌঁছান। আপনার নাম-ঠিকানা লেখা ব্যাগ বা সুটকেসে কোনো পচনশীল খাবার রাখবেন না। বিমানবন্দরে লাগেজে যে মাল দেবেন, তা ঠিকমতো বাঁধা হয়েছে কি না, দেখে নেবেন। বিমানের কাউন্টারে মাল রেখে এর টোকেন দিলে তা যত্ন করে রাখবেন। কারণ, জেদ্দা বিমানবন্দরে ওই টোকেন দেখালে সেই ব্যাগ আপনাকে ফেরত দেবে। ইমিগ্রেশন, চেকিংয়ের পর নিজ মালপত্র যত্নে রাখুন।
বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র, পিলগ্রিম পাস, বিমানের টিকিট, টিকা দেওয়ার কার্ড, অন্য কাগজপত্র, টাকা, বিমানে পড়ার জন্য ধর্মীয় বই ইত্যাদি গলায় ঝোলানোর ব্যাগে যত্নে রাখুন।
সময়মতো বিমানে উঠে নির্ধারিত আসনে বসুন।
জেদ্দা বিমানবন্দর
মোয়াল্লেমের গাড়ি আপনাকে জেদ্দা থেকে মক্কায় যে বাড়িতে থাকবেন, সেখানে নামিয়ে দেবে। মোয়াল্লেমের নম্বর (আরবিতে লেখা) কব্জি বেল্ট দেওয়া হবে, তা হাতে পরে নেবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র (যাতে পিলগ্রিম পাস নম্বর, নাম, ট্রাভেল এজেন্টের নাম ইত্যাদি থাকবে) গলায় ঝোলাবেন।
জেদ্দা থেকে মক্কায় পেঁৗছাতে দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। চলার পথে তালবিয়া পড়ুন (লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক···)।
মক্কায় পৌঁছে
মক্কায় পৌঁছে আপনার থাকার জায়গায় মালপত্র রেখে ক্লান্ত থাকলে বিশ্রাম করুন। আর যদি নামাজের ওয়াক্ত হয়, নামাজ আদায় করুন। বিশ্রাম শেষে দলবদ্ধভাবে উমরাহর নিয়ত করে থাকলে উমরাহ পালন করুন।
মসজিদুল হারামে (কাবা শরিফ) অনেকগুলো প্রবেশপথ আছে; সব কটি দেখতে একই রকম। কিন্তু প্রতিটি প্রবেশপথে আরবি ও ইংরেজিতে ১, ২, ৩ নম্বর ও প্রবেশপথের নাম আছে, যেমন-বাদশা আবদুল আজিজ প্রবেশপথ। আপনি আগে থেকে ঠিক করবেন, কোন প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকবেন বা বের হবেন। আপনার সফরসঙ্গীকেও স্থান চিনিয়ে দিন। তিনি যদি হারিয়ে যান, তাহলে নির্দিষ্ট নম্বর গেটের সামনে থাকবেন। এতে ভেতরে ভিড়ে হারিয়ে গেলেও নির্দিষ্ট স্থানে এসে সঙ্গীকে খুঁজে পাবেন।
কাবা শরিফে স্যান্ডেল রাখার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকবেন, নির্দিষ্ট স্থানে জুতা রাখার জায়গায় রাখুন। এখানে-সেখানে জুতা রাখলে পরে আর খঁুজে পাবেন না। প্রতিটি জুতা রাখার র্যাকেও নম্বর দেওয়া আছে। এই নম্বর মনে রাখুন।
উমরাহর নিয়মকানুন আগে জেনে নেবেন, যেমন-সাতবার তাওয়াফ করা, জমজমের পানি পান করা, নামাজ আদায় করা, সাঈ করা (সাফা-মারওয়া পাহাড়ে দৌড়ানো-যদিও মসৃণ পথ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত), মাথা মুন্ডানো অথবা চুল ছোট করা-এসব কাজ ধারাবাহিকভাবে করা। ওয়াক্তীয় নামাজের সময় হলে যতটুকু হয়েছে ওই সময় নামাজ পড়ে আবার বাকিটুকু শেষ করা।
কাবা শরিফ
কাবা শরিফে প্রবেশ করার সময় বিসমিল্লাহ ও দরুদ শরিফ পড়ার পর আল্লাহুম মাফ তাহলি আব-ওয়া-বা রাহমাতিকা পড়বেন। মসজিদুল হারামে কোনো নারীর পাশে অথবা তাঁর পেছনে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা উচিত নয়।
কোনো দরজার সামনে নামাজ পড়া ঠিক নয়, এতে পথচারীর কষ্ট হয়।
হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়া সুন্নত। তবে ভিড়ের কারণে না পারলে দূর থেকে চুমুর ইশারা করলেই চলবে। ভিড়ে অন্যকে কষ্ট দেওয়া যাবে না।
উমরাহ ও হজ পালন
উমরাহ হল (হারামের সীমানার বাইরে মিকাতের ভেতরের স্থান) থেকে অথবা মিকাত থেকে ইহরাম বেঁধে বায়তুল্লাহ শরিফ তাওয়াফ করা, সাফা-মারওয়া সাঈ করা এবং মাথার চুল ফেলে দেওয়া বা ছোট করাকে উমরাহ বলে।
হজ তিন প্রকার-
(ক) তামাত্তু,
(খ)কিরান
(গ) ইফরাদ।
হজ্বে তামাত্তু
হজের মাস সমূহে (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ) উমরাহর নিয়তে ইহরাম করে, উমরাহ পালন করে, পরে হজের নিয়ত করে হজ পালন করাকে হজে তামাত্তু বলে।
হজ্বে কিরান
হজের মাসসমূহে একই সঙ্গে হজ ও উমরাহ পালনের নিয়তে ইহরাম করে উমরাহ ও হজ করাকে হজে কিরান বলে।
হজ্বে ইফরাদ
শুধু হজ পালনের উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধে হজ সম্পাদনকে হজে ইফরাদ বলে।
তামাত্তু হজের নিয়ম
১· উমরাহর ইহরাম (ফরজ)
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সেরে গোসল বা অজু করে নিন।
মিকাত অতিক্রমের আগেই সেলাইবিহীন একটি সাদা কাপড় পরিধান করুন, আরেকটি গায়ে জড়িয়ে নিয়ে ইহরামের নিয়তে দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিন।
শুধু উমরাহর নিয়ত করে এক বা তিনবার তালবিয়া পড়ে নিন।
তালবিয়া হলো-লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নিমাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।
২· উমরার তাওয়াফ (ফরজ)
অজুর সঙ্গে ইজতিবাসহ তাওয়াফ করুন। ইহরামের চাদরকে ডান বগলের নিচের দিক থেকে পেঁচিয়ে এনে বাঁ কাঁধের ওপর রাখাকে ইজতিবা বলে।
হাজরে আসওয়াদকে সামনে রেখে তার বরাবর ডান পাশে দাঁড়ান (২০০৬ সাল থেকে মেঝেতে সাদা মার্বেল পাথর আর ডান পাশে সবুজ বাতি)। তারপর দাঁড়িয়ে তাওয়াফের নিয়ত করুন। তারপর ডানে গিয়ে এমনভাবে দাঁড়াবেন, যেন হাজরে আসওয়াদ পুরোপুরি আপনার সামনে থাকে। এরপর দুই হাত কাঁধ পর্যন্ত তুলে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর, লা ইলাহা ইল্লাল লা-হু ওয়া লিল্লাহিল হামদ, ওয়াস সালাতু ওয়াস-সালামু আলা রাসুলিল্লাহ পড়ুন। পরে হাত ছেড়ে দিন এবং হাজরে আসওয়াদের দিকে হাত দিয়ে ইশারা করে হাতের তালুতে চুমু খেয়ে ডান দিকে চলতে থাকুন, যাতে পবিত্র কাবাঘর পূর্ণ বাঁয়ে থাকে। পুরুষের জন্য প্রথম তিন চক্করে রমল করা সুন্নত । রমল অর্থ বীরের মতো বুক ফুলিয়ে কাঁধ দুলিয়ে ঘন ঘন কদম রেখে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলা।
রুকনে ইয়ামানিকে সম্ভব হলে শুধু হাতে স্পর্শ করুন। রুকনে ইয়ামানিতে এলে রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়াকিনা আযাবান্নার, ওয়াদখিলনাল জান্নাতা মাআল আবরার, ইয়া আযিযু ইয়া গাফফার, ইয়া রাব্বাল আলামিন বলুন। চুমু খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। অতঃপর হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত এসে চক্কর পুরো করুন।
পুনরায় হাজরে আসওয়াদ বরাবর দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে ইশারা করে হাতের তালুতে চুমু খেয়ে দ্বিতীয় চক্কর শুরু করুন। এভাবে সাত চক্করে তাওয়াফ শেষ করুন।
হাতে সাত দানার তসবি অথবা গণনাযন্ত্র রাখতে পারেন । তাহলে সাত চক্কর ভুল হবে না।
৩· তাওয়াফের দুই রাকাত নামাজ (ওয়াজিব)
মাকামে ইবরাহিমের পেছনে বা হারামের যেকোনো স্থানে তাওয়াফের নিয়তে (মাকরুহ সময় ছাড়া) দুই রাকাত নামাজ পড়ে দোয়া করুন। মনে রাখবেন, এটা দোয়া কবুলের সময়।
৪· উমরাহর সাঈ (ওয়াজিব)
সাফা পাহাড়ের কিছুটা ওপরে উঠে (এখন আর পাহাড় নেই, মেঝেতে মার্বেল পাথর, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত) কাবা শরিফের দিকে মুখ করে সাঈ-এর নিয়ত করে, দোয়ার মতো করে হাত তুলে তিনবার তাকবির বলে দোয়া করুন। তারপর মারওয়ার দিকে রওনা হয়ে দুই সবুজ দাগের মধ্যে (এটা সেই জায়গা, যেখানে হজরত হাজেরা (রা·) পানির জন্য দৌড়েছিলেন) একটু দ্রুত পথ চলে মারওয়ায় পেঁৗছালে এক চক্কর পূর্ণ হলো। মারওয়া পাহাড়ে উঠে কাবা শরিফের দিকে মুখ করে দোয়ার মতো করে হাত তুলে তাকবির পড়ুন এবং আগের মতো চলে সেখান থেকে সাফায় পেঁৗছালে দ্বিতীয় চক্কর পূর্ণ হলো এভাবে সপ্তম চক্করে মারওয়ায় গিয়ে সাঈ শেষ করে দোয়া করুন।
৫· হলক করা (ওয়াজিব)
পুরুষ হলে রাসুলুল্লাহ (সা·)-এর আদর্শের অনুসরণে সম্পূর্ণ মাথা মুণ্ডন করবেন, তবে মাথার চুল ছাঁটতেও পারেন। মহিলা হলে চুলের মাথা এক ইঞ্চি পরিমাণ কাটবেন।
এ পর্যন্ত উমরাহর কাজ শেষ।
হজের ইহরাম না বাঁধা পর্যন্ত ইহরামের আগের মতো সব কাজ করতে পারবেন।
৬· হজের ইহরাম (ফরজ)
হারাম শরিফ বা বাসা থেকে আগের নিয়মে শুধু হজের নিয়তে ইহরাম বেঁধে ৮ জিলহজ জোহরের আগেই মিনায় পৌঁছে যাবেন।
৭· মিনায় অবস্থান (সুন্নত)
৮ জিলহজ জোহর থেকে ৯ জিলহজ ফজরসহ মোট পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিনায় আদায় করুন এবং এ সময়ে মিনায় অবস্থান করুন।
৮· আরাফাতের ময়দানে অবস্থান (ফরজ)
আরাফাতের ময়দানে অবস্থান হজের অন্যতম ফরজ।
৯ জিলহজ দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করুন। এদিন নিজ তাঁবুতে জোহর ও আসরের নামাজ স্ব স্ব সময়ে আলাদাভাবে আদায় করুন। মুকিম হলে চার রাকাত পূর্ণ পড়ুন। মসজিদে নামিরায় উভয় নামাজ জামাতে পড়লে একসঙ্গে আদায় করতে পারেন। যদি ইমাম মুসাফির হন আর মসজিদে নামিরা যদি আপনার কাছ থেকে দূরে থাকে, তাহলে সেখানে অবস্থান করবেন। মাগরিবের নামাজ না পড়ে মুজদালিফার দিকে রওনা হোন।
৯· মুজদালিফায় অবস্থান (সুন্নত)
আরাফায় সূর্যাস্তের পর মুজদালিফায় গিয়ে এশার সময়ে মাগরিব ও এশা এক আজান ও এক ইকামতে একসঙ্গে আদায় করুন।
এখানেই রাত যাপন করুন (এটি সুন্নত) এবং ১০ জিলহজ ফজরের পর সূর্যোদয়ের আগে কিছু সময় মুজদালিফায় অবশ্যই অবস্থান করুন (এটি ওয়াজিব)। তবে দুর্বল (অপারগ) ও নারীদের বেলায় এটা অপরিহার্য নয়। রাতে ছোট ছোট ছোলার দানার মতো ৭০টি কঙ্কর সংগ্রহ করুন। মুজদালিফায় কঙ্কর খুব সহজেই পেয়ে যাবেন।
১০· কঙ্কর মারা (প্রথম দিন)
১০ জিলহজ ফজর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত শুধু বড় জামারাকে (বড় শয়তান) সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করুন (ওয়াজিব)। এ সময়ে সম্ভব না হলে এ রাতের শেষ পর্যন্ত কঙ্কর মারতে পারেন। দুর্বল ও নারীদের জন্য রাতেই কঙ্কর মারা উত্তম ও নিরাপদ।
কঙ্কর মারার স্থানে বাংলা ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়; তা মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং মেনে চলুন।
১১· কোরবানি করা (ওয়াজিব)
১০ জিলহজ কঙ্কর মারার পরই কেবল কোরবানি নিশ্চিত পন্থায় আদায় করুন।
কোরবানির পরেই কেবল রাসুলুল্লাহ (সা·)-এর আদর্শের অনুসরণে মাথা হলক করুন (ওয়াজিব)। তবে চুল ছোটও করতে পারেন।
খেয়াল রাখবেনঃ কঙ্কর মারা, কোরবানি করা ও চুল কাটার মধ্যে ধারাবাহিকতা জরুরি ও ওয়াজিব; অন্যথায় দম বা কাফফারা দিয়ে হজ শুদ্ধ করতে হবে। বর্তমানে এই সমস্যা সমাধানের সহজ উপায় হজে ইফরাদ করা। যেখানে কোরবানি নেই। হজের পরে উমরাহ করা যায়।
১২· তাওয়াফে জিয়ারত (ফরজ)
১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগেই তাওয়াফে জিয়ারত করে নিতে হবে। তা না হলে ১২ জিলহজের পরে তাওয়াফটি করে দম দিতে হবে। তবে নারীরা প্রাকৃতিক কারণে করতে না পারলে পবিত্র হওয়ার পরে করবেন।
১৩· কঙ্কর মারা (ওয়াজিব)
১১ ও ১২ জিলহজ কঙ্কর মারা (ওয়াজিব)। ১১-১২ জিলহজ দুপুর থেকে সময় আরম্ভ হয়। ভিড় এড়ানোর জন্য আসরের পর অথবা আপনার সুবিধাজনক সময়ে সাতটি করে কঙ্কর মারবেন-প্রথমে ছোট, মধ্যম, তারপর বড় শয়তানকে। ছোট জামারা থেকে শুরু করে বড় জামারায় শেষ করুন। সম্ভব না হলে শেষরাত পর্যন্ত মারতে পারেন। দুর্বল ও নারীদের জন্য রাতেই নিরাপদ।
১৪· মিনা ত্যাগ
১৩ জিলহজ মিনায় না থাকতে চাইলে ১২ জিলহজ সন্ধ্যার আগে অথবা সন্ধ্যার পর ভোর হওয়ার আগে মিনা ত্যাগ করুন। সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করতেই হবে-এটা ঠিক নয়। তবে সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করা উত্তম।
১৫· বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব)
বাংলাদেশ থেকে আগত হজযাত্রীদের হজ শেষে বিদায়ী তাওয়াফ করতে হয় (ওয়াজিব)। তবে হজ শেষে যেকোনো নফল তাওয়াফই বিদায়ী তাওয়াফে পরিণত হয়ে যায়।
নারীদের মাসিকের কারণে বিদায়ী তাওয়াফ করতে না পারলে কোনো ক্ষতি নেই; দম বা কাফফারাও দিতে হয় না।
১৬· মিনায় অবস্থানরত দিনগুলোতে (১০, ১১ জিলহজ) মিনাতেই রাত যাপন করুন। আর ১২ তারিখ রাত যাপন করুন যদি ১৩ তারিখ রমি (কঙ্কর ছুড়ে মারা) শেষ করে ফিরতে চান (সুন্নত)।
কিরান হজের নিয়ম
কিরান হজের নিয়ম
১· ইহরাম বাঁধা (ফরজ)
জেদ্দা পৌঁছানোর আগে একই নিয়মে ইহরাম করার কাজ সমাপ্ত করুন। তবে তালবিয়ার আগেই হজ ও উমরাহ উভয়ের নিয়ত একসঙ্গে করুন।
২· উমরাহর তাওয়াফ (পূর্বে বর্ণিত) নিয়মে আদায় করুন (ওয়াজিব)।
৩· উমরাহর সাঈ করুন, তবে এরপর চুল ছাঁটবেন না; বরং ইহরামের সব বিধিবিধান মেনে চলুন (ওয়াজিব)।
৪· তাওয়াফে কুদুম করুন (সুন্নত)।
৫· এরপর সাঈ করুন, যদি এ সময় সাঈ করতে না পারা যায় তাওয়াফে জিয়ারতের পরে করুন (ওয়াজিব)।
৬· আট জিলহজ জোহর থেকে ৯ জিলহজ ফজর পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিনাতে পড়ুন। এ সময়ে মিনাতে অবস্থান করুন (সুন্নত)।
৭· আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করুন (ফরজ)।
৮· নয় জিলহজ সূর্যাস্তের পর থেকে মুজদালিফায় অবস্থান এবং মাগরিব ও এশা একসঙ্গে এশার সময়ে আদায় করুন (সুন্নত)। তবে ১০ জিলহজ ফজরের পর কিছু সময় অবস্থান করুন (ওয়াজিব)।
৯· ওপরে বর্ণিত নিয়ম ও সময় অনুসারে ১০ জিলহজ কঙ্কর নিক্ষেপ করুন (ওয়াজিব)।
১০· কোরবানি করুন (ওয়াজিব)।
১১· মাথার চুল মুণ্ডন করে নিন (ওয়াজিব)। তবে চুল ছেঁটেও নিতে পারেন।
১২· তাওয়াফে জিয়ারত করুন (ফরজ) এবং সাঈ করে নিন, যদি তাওয়াফে কুদুমের পরে না করে থাকেন।
১৩· এগারো-বারো জিলহজ কঙ্কর নিক্ষেপ করুন (ওয়াজিব)। ১৩ জিলহজ কঙ্কর মারা রাসুলুল্লাহ (সা·)-এর আদর্শ।
১৪· মিনায় থাকাকালীন মিনাতেই রাত যাপন করুন (সুন্নত)।
১৫· মিকাতের বাইরে থেকে আগত হাজিরা বিদায়ী তাওয়াফ করুন (ওয়াজিব)।
ইফরাদ হজের নিয়ম
১· শুধু হজের নিয়তে (আগে বর্ণিত) ইহরাম বাঁধুন (ফরজ)।
২· মক্কা শরিফ পেঁৗছে তাওয়াফে কুদুম করুন (সুন্নত)।
৩· সাঈ করুন (ওয়াজিব)। এ সময়ে সম্ভব না হলে সাঈ তাওয়াফে জিয়ারতের পরে করুন।
৪· মিনায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও রাত যাপন করুন (সুন্নত)।
৫· আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করুন (ফরজ)।
৬· মুজদালিফায় অবস্থান করুন (সুন্নত)। তবে ১০ জিলহজ ফজরের পর কিছু সময় অবস্থান ওয়াজিব।
৭· ১০ জিলহজে জামারাতে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করুন (ওয়াজিব)।
৮· যেহেতু এ হজে কোরবানি ওয়াজিব নয়, তাই কঙ্কর নিক্ষেপের পর মাথা হলক করে নিন; তবে চুল ছেঁটেও নিতে পারেন (ওয়াজিব)।
৯· তাওয়াফে জিয়ারত করুন (ফরজ) এবং যদি তাওয়াফে কুদুমের পর সাঈ না করে থাকেন, তাহলে সাঈ করে নিন (ওয়াজিব)।
১০· ১১-১২ জিলহজ আগে বর্ণিত নিয়ম ও সময়ে কঙ্কর নিক্ষেপ করুন (ওয়াজিব)।
১১· বদলি হজকারী ইফরাদ হজ করবেন।
ইহরাম, অন্যান্য পরামর্শ ও মক্কায় যা দ��
ইহরাম সম্পর্কে জরুরি বিষয়
যাঁরা সরাসরি বাংলাদেশ থেকে মক্কা শরিফ যাবেন, তাঁরা বাড়িতে, হাজি ক্যাম্পে বা বিমানে ইহরাম করে নেবেন। বাড়িতে বা হাজি ক্যাম্পে ইহরাম করে নেওয়া সহজ। ইহরাম ছাড়া যেন মিকাত অতিক্রম না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
যাঁরা মদিনা শরিফ যাবেন, তাঁরা মদিনা শরিফ থেকে মক্কা যাওয়ার সময় ইহরাম করবেন। কোনো নারী প্রাকৃতিক কারণে অপবিত্র হয়ে থাকলে ইহরামের প্রয়োজন হলে অজু-গোসল করে নামাজ ব্যতীত লাব্বাইক পড়ে ইহরাম করে নেবেন। তাওয়াফ ছাড়া হজ, উমরাহর সমস্ত কাজ নির্ধারিত নিয়মে আদায় করবেন।
তাওয়াফ ও সাঈ করার সময় বিশেষভাবে লক্ষণীয়
তাওয়াফের সময় অজু থাকা জরুরি। তবে সাঈ করার সময় অজু না থাকলেও সাঈ সম্পন্ন হয়ে যাবে।
হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়া একটি সুন্নত। তা আদায় করতে গিয়ে লোকজনকে ধাক্কাধাক্কির মাধ্যমে কষ্ট দেওয়া বড় গুনাহ। তাই তাওয়াফকালে বেশি ভিড় দেখলে ইশারায় চুমু দেবেন।
সাঈ করার সময় সাফা থেকে মারওয়া কিংবা মারওয়া থেকে সাফা প্রতিটি ভিন্ন ভিন্ন চক্কর। এভাবে সাতটি চক্কর সম্পূর্ণ হলে একটি সাঈ পূর্ণ হবে।
অন্যান্য পরামর্শ
সৌদি আরবে অবস্থানকালে কোনো চাঁদা ওঠানো, সাহায্য চাওয়া, ভিক্ষা করা দণ্ডনীয় অপরাধ। সুতরাং এগুলো থেকে বিরত থাকুন।
সৌদি আরবে অবস্থানকালে ট্রাফিক আইন মেনে চলুন, সিগন্যাল পড়লে রাস্তা পার হোন। রাস্তা পার হওয়ার সময় অবশ্যই ডানে-বাঁয়ে দেখেশুনে সাবধানে পার হবেন। কখনো দৌড় দেবেন না।
কাবা শরিফ ও মসজিদে নববীর ভেতরে কিছুদূর পরপর পবিত্র কোরআন মজিদ রাখা আছে আর পাশে জমজম পানি (স্বাভাবিক ও ঠান্ডা) খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
মনে রাখবেন, মসজিদে নববী ও হারামের সীমানার মধ্যে ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
শরীরের কোনো স্থান কেটে গেলে অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম ব্যবহার করুন এবং ক্ষতস্থানটি প্লাস্টার কিংবা ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে দিন।
হাঁচি কিংবা কাশি দেওয়ার সময় অবশ্যই আপনার মুখ ঢেকে নিন।
হজযাত্রীদের যাবতীয় তথ্য, দেশের পরিবার-পরিজনের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে সংবাদ পৌঁছানো যায়। হারানো হজযাত্রীদের খুঁজে পাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশ হজ মিশনে অবস্থিত হাতিল আইটি ইনফরমেশন সার্ভিসেস সাহায্য করে।
কোনো ধরনের অসুস্থতা কিংবা দুর্ঘটনায় পড়লে বাংলাদেশ হজ মিশনের মেডিকেল সদস্যদের (চিকিৎসক) সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
হজের সময় হজযাত্রীদের যেন কোনো রকম কষ্ট না হয়। আপনার ট্রাভেল এজেন্সি আপনাকে যথাযথ সুবিধাদি (দেশ থেকে আপনাকে থাকা, খাওয়াসহ অন্য যেসব সুবিধার কথা বলেছিল) না দিলে আপনি মক্কা ও মদিনার বাংলাদেশ হজ মিশনকে জানাতে পারেন। এতেও আপনি সন্তুষ্ট না থাকলে সৌদির ওজারাতুল হজকে (হজ মন্ত্রণালয়) লিখিত অভিযোগ করতে পারেন।
মক্কায় যা দেখবেন
মসজিদুল হারাম (কাবা শরিফ)।
সাফা ও মারওয়া।
মসজিদুল হারামের পূর্ব দিকে সাফা-মারওয়া পাহাড় পার হয়ে বাইরে গেলে পথের পাশে দোতলা একটি দালানে মক্কা লাইব্রেরি।
কয়েকটি বিশিষ্ট স্থানের পরিচয়
মাতাফঃ কাবাঘরের চারদিকে অবস্থিত তওয়াফের স্থানকে মাতাফ বা চত্বর বলা হয়।
হাজরে আসওয়াদ বা কালো পাথরঃ কাবা শরিফের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে লাগানো আছে একটি কালো পাথর, এটিই হাজরে আসওয়াদ। মুসলমানদের কাছে এই পাথর অতি মূল্যবান ও পবিত্র। তাদের কাছে এটি বেহেশতি পাথর, তাই এতে চুমু দেওয়ার ফজিলতও বেশি। হাজরে আসওয়াদ তাওয়াফ (কাবা শরিফ সাতবার চক্কর দেওয়া) শুরুর স্থান। প্রতিবার চক্কর দেওয়ার সময় এই হাজরে আসওয়াদে চুমু দিতে হয়। ভিড়ের কারণে না পারলে চুমুর ইশারা করলেও চলে-এটাই নিয়ম।
কাবাঘরঃ কাবাঘর প্রায় বর্গাকৃতির। এর র্দৈঘ্য ও প্রস্থ যথাক্রমে আনুমানিক ৪৫ ও ৪০ ফুট। কাবা শরিফের দরজা একটি এবং দরজাটি কাবাঘরের পূর্ব দিকে অবস্থিত।
মিযাবে রহমতঃ বায়তুল্লাহর উত্তর দিকের ছাদে (হাতিমের মাঝ বরাবর) যে নালা বসানো আছে, তাকে মিযাবে রহমত বলা হয়। এই নালা দিয়ে ছাদের বৃষ্টির পানি পড়ে।
মাকামে ইবরাহীমঃ কাবা শরিফের পাশেই আছে ক্রিস্টালের একটি বাক্স, চারদিকে লোহার বেষ্টনী। ভেতরে বর্গাকৃতির একটি পাথর। পাথরটির দৈর্ঘø, প্রস্থ ও উচ্চতা সমান, প্রায় এক হাত। এ পাথরটিই মাকামে ইবরাহীম। মাকাম শব্দের একটি অর্থ হচ্ছে দাঁড়ানোর স্থান। অর্থাৎ হজরত ইবরাহীম (আ·) এর দাঁড়ানোর স্থান।
হাতিমঃ কাবাঘরের উত্তর দিকে অর্ধবৃত্তাকার মানুষ-সমান উঁচু প্রাচীরে ঘেরা একটি স্থান।
জান্নাতুল মুআল্লাঃ মসজিদুল হারামের পূর্ব দিকে মক্কা শরিফের বিখ্যাত কবরস্থান।
গারে হেরাঃ মক্কার সর্বাধিক উচ্চ পাহাড়ের একটি নির্জন স্থান। এখানে নবী করিম (সা·) ধ্যানমগ্ন থাকতেন এবং এখানেই সর্বপ্রথম ওহি নাজিল হয়।
গারে সাওরঃ মসজিদুল হারামের পশ্চিমে হিজরতের সময় এই প্রকাণ্ড সুউচ্চ পাহাড়ে রাসুলুল্লাহ (সা·) তিন দিন অবস্থান করেছিলেন।
জাবাল-ই-রহমতঃ আরাফাতের ময়দানে অবস্থিত। এ পাহাড়ে সর্বপ্রথম নবী হজরত আদম (আ·) এর দোয়া কবুল হয়। এখানে তিনি বিবি হাওয়া (আ·) এর সাক্ষাৎ পান। ইসলামের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা·) বিদায় হজের খুতবাও এখান থেকেই দিয়েছিলেন।
জমজম কূপঃ দুনিয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের যত অনুপম নিদর্শন আছে, তার মধ্যে মক্কা শরিফে অবস্থিত জমজম কূপ অন্যতম। জমজম কূপের ইতিহাস কমবেশি সবারই জানা। এ কূপের পানি সর্বাধিক স্বচ্ছ, উৎকৃষ্ট, পবিত্র ও বরকতময়। এ পানি শুধু পিপাসাই মেটায় না; এতে ক্ষুধাও নিবৃত্ত হয়। এ সম্পর্কে রাসুলে করিম (সা·) বাণী প্রদান করেছেন, এ পানি শুধু পানীয় নয়; বরং খাদ্যের অংশ এবং এতে পুষ্টি রয়েছে।
হজ পালন করতে গিয়ে মক্কায় কিসওয়া তৈরির কারখানা দেখে আসতে পারেন। ট্যাক্সিতে কাবা শরিফ থেকে ১০ রিয়ালে পেঁৗছে যাবেন কিসওয়া। পাশেই মক্কা-মদিনার দুই হারাম শরিফে ব্যবহূত জাদুঘর। জাদুঘরে দেখতে পাবেন বিভিন্ন রকম কিসওয়া (কাবার গিলাফ)। সেখানে অনেক বাংলাদেশি চাকরি করেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে আরও অনেক কিছু জানতে পারবেন।
আরও কিছু করণীয়
আরও কিছু করণীয়
আরাফাতের ময়দানে অনেক প্রতিষ্ঠান বিনা মূল্যে খাবার, জুস, ফল ইত্যাদি দিয়ে থাকে। ওই সব খাবার আনতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কি হয়, তাই সাবধান থাকবেন।
মুজদালিফায় রাতে
www.facebook.com/hafej.minhaz.1
লেবেলসমূহ:
কওমি মাদ্রাসার ইতিহাস,
কালিমা,
তাফসীরুল কোরান,
দেওবন্দ ইতিহাস,
হজ্জ
সোমবার, ১১ জুলাই, ২০১৬
ইন্টারনেটে ইনকাম করতে চান?
লেবেলসমূহ:
কালিমা,
দেওবন্দ ইতিহাস
রবিবার, ১০ জুলাই, ২০১৬
ফাযিল ১ম বর্ষের রুটিন/২০১৬
লেবেলসমূহ:
কালিমা,
তাফসীরুল কোরান
সোমবার, ৪ জুলাই, ২০১৬
বাঙালি সংকর জাতি:
ভূমিকা: বাংলাদেশের অধিবাসীরা প্রধানত বহিরাগত এবং এদেশবাসীর
দৈহিক গড়নে নানা নরগোষ্ঠীর প্রভাব বিদ্যমান। সুপ্রাচীন কাল থেকে এ অঞ্চলে বিভিন্ন কারণে
বিভিন্ন তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর আগমন ঘটেছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর মিলন ও মিশ্রণের
মাধ্যমে বাঙালি জাতি গড়ে উঠেছে। স্যার হার্বাট রিজলি পণ্ডিত বিরাজশঙ্গর গুহ, রমাপ্রসাদ
চন্দ্র, নীহাররঞ্জন রায় প্রমুখ পণ্ডিতগণ মনে করেন বাঙালি একটি নতুন মিশ্র জাতি বা সংকর
জাতি। নিম্নে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হল:
বাঙালি সংকর জাতি: বিভিন্ন জাতির মিলন ও সমন্বয়ে বাঙালি জাতি গড়ে উঠেছে। এর মূল
কাঠামো সৃষ্টির কাল প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে মুসলিম অধিকারের পুর্ব পর্যন্ত বিস্তৃত।
১. অনার্য-আর্য নরগোষ্ঠী: বাঙালি আদি মানব বা পুরুষের দুই শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা:
১. অনার্য-আর্য নরগোষ্ঠী: বাঙালি আদি মানব বা পুরুষের দুই শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা:
ক. প্রাক আর্য বা অনার্য নরগোষ্ঠী।
খ. আর্য নরগোষ্ঠী।
অনার্য নরগোষ্ঠী বাংলার আদি নরগোষ্ঠী, অনার্য নরগোষ্ঠীর উৎপত্তি হয় অম্বিক, দ্রাবিড়, আলপীয়, মোঙ্গলীয় এবং নেগ্রিটো ও আরো কয়েকটি জাতির মিশ্রণে।
2. নেগ্রিটো: বাঙালি জনগোষ্ঠীর প্রথম স্তর নেগ্রিটো জন। এরা খর্বাকৃতি, কালো বর্ণ চুল উনবিৎ, খাটো, বেটে পুরু ও উল্টানো।
৩. অস্টিক বা অস্ট্রায়েড: নৃবিজ্ঞানীদের মতে অস্টিক বা অস্ট্রালয়েড গোস্ঠী থেকে বাঙালি জাতির প্রধান অংশ গড়ে উঠেছে। নৃতাত্ত্বিক ভাষায় ভাষায় এর নাম অসস্ট্রালয়েড, অস্টিকাসের নিষাদও বলা হয়। বাঙালি জাতি সত্তার সর্বস্তরে কমবেশি এ ভেড্ডিদের রক্তের খোঁজ পাওয়া যায়। সাঁওতাল, মুণ্ডা, মালপাহাড়ি ইত্যাদি জাতি গোষ্ঠি অস্টেলীয়ডদের অন্তুর্ভুক্ত।
৪. আলপাইন: আলপাইন জাতি দ্রাবিড়দের পরে ভারতে প্রবেশ করে। বাঙালি গুজরাটি, মারাঠি, ওড়িশি জাতির পূর্বপুরুষদের অনেকেই আলপাইন গোষ্ঠীর লোক ছিল। এদের থেকে বাঙালি জাতির বড় একটি অংশ সৃষ্টি হয়।
৫. দ্রাবিড়: দ্রাবিড়রা এদেশের আদি অধিবাসীদের অন্যতম। পাঁচ হাজার বছর পূর্বে বাংলাদেশে দ্রাবিড়রা প্রবেশ করে।
৬. মঙ্গোলয়েড: বাঙালি জাতি সত্তার মিশ্রণে মঙ্গোলয়দের প্রভাব পাওয়া যায়। বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে এ জনগোষ্ঠীর প্রভাব বেশী পরিলক্ষিত হয়। গারো, চাকমা, মণিপুরি, খাসিয়া, মুরং ইত্যাদি উপজাতী এ মঙ্গোলয়েডের অন্তর্গত।
2. নেগ্রিটো: বাঙালি জনগোষ্ঠীর প্রথম স্তর নেগ্রিটো জন। এরা খর্বাকৃতি, কালো বর্ণ চুল উনবিৎ, খাটো, বেটে পুরু ও উল্টানো।
৩. অস্টিক বা অস্ট্রায়েড: নৃবিজ্ঞানীদের মতে অস্টিক বা অস্ট্রালয়েড গোস্ঠী থেকে বাঙালি জাতির প্রধান অংশ গড়ে উঠেছে। নৃতাত্ত্বিক ভাষায় ভাষায় এর নাম অসস্ট্রালয়েড, অস্টিকাসের নিষাদও বলা হয়। বাঙালি জাতি সত্তার সর্বস্তরে কমবেশি এ ভেড্ডিদের রক্তের খোঁজ পাওয়া যায়। সাঁওতাল, মুণ্ডা, মালপাহাড়ি ইত্যাদি জাতি গোষ্ঠি অস্টেলীয়ডদের অন্তুর্ভুক্ত।
৪. আলপাইন: আলপাইন জাতি দ্রাবিড়দের পরে ভারতে প্রবেশ করে। বাঙালি গুজরাটি, মারাঠি, ওড়িশি জাতির পূর্বপুরুষদের অনেকেই আলপাইন গোষ্ঠীর লোক ছিল। এদের থেকে বাঙালি জাতির বড় একটি অংশ সৃষ্টি হয়।
৫. দ্রাবিড়: দ্রাবিড়রা এদেশের আদি অধিবাসীদের অন্যতম। পাঁচ হাজার বছর পূর্বে বাংলাদেশে দ্রাবিড়রা প্রবেশ করে।
৬. মঙ্গোলয়েড: বাঙালি জাতি সত্তার মিশ্রণে মঙ্গোলয়দের প্রভাব পাওয়া যায়। বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে এ জনগোষ্ঠীর প্রভাব বেশী পরিলক্ষিত হয়। গারো, চাকমা, মণিপুরি, খাসিয়া, মুরং ইত্যাদি উপজাতী এ মঙ্গোলয়েডের অন্তর্গত।
লেবেলসমূহ:
কালিমা,
তাফসীরুল কোরান,
নামাজ,
বিখ্যাত মনিষি
মঙ্গলবার, ২৮ জুন, ২০১৬
নাস্তিকদের বিরুদ্ধে চমৎকার গান
নাস্তিকদের বিরুদ্ধে জালাময়ি গান শুনতে নিচের লিংকে জান-ক্লিক করুন
লেবেলসমূহ:
কালিমা,
তাফসীরুল কোরান,
দেওবন্দ ইতিহাস
ইসলামীক যত গান এই ঠিকানায়
শেরপুরের কৃতি সন্তান খাঁন মোহাম্মদ আমিনুল ইসলামের লেখা নতুন ইসলামী হামদ-নাত গজল শুনতে ভিজিট করুন ক্লিক
লেবেলসমূহ:
কালিমা,
তাফসীরুল কোরান,
দেওবন্দ ইতিহাস
বেফাকের ফলাফল
আগামী 29 শে জুন/2016 দুপুর 12.00 মি: বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসার শিক্ষা বোর্ড ( বেফাক) এর 39 তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষরা ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
শিক্ষার্থীদের আলাদা মার্কশিট পাওয়া যাবে এই ঠিকানায়- ক্লিক করুন
মাদ্রাসাওয়ারী ফলাফল জানতে এখানে ক্লিক করুন
মেধা তালিকা জানতে ক্লিক করুন
শিক্ষার্থীদের আলাদা মার্কশিট পাওয়া যাবে এই ঠিকানায়- ক্লিক করুন
মাদ্রাসাওয়ারী ফলাফল জানতে এখানে ক্লিক করুন
মেধা তালিকা জানতে ক্লিক করুন
লেবেলসমূহ:
কালিমা,
তাফসীরুল কোরান,
দেওবন্দ ইতিহাস
রবিবার, ২৬ জুন, ২০১৬
তাওহিদ কাকে বলে?
ভূমিকা: মহাকাশে অবস্থিত অসংখ্যা জ্যোতিষ্কের মধ্যে একটি জ্যোতিষ্ক গ্রহ। আমাদের আবাস্থল এ পৃথিবী মহাকাশের একটি ক্ষুদ্র গ্রহ। এখানে প্রতিদিনই দেখা যায় একই সময়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সাথে সাথে ক্রমান্বয়ে দিনের পর রাত, আবার রাতের পর দিন আসছে। ঠিক একইভাবে ঋতু পরিবর্তনে আসে শীত ও গ্রীষ্ম এবং ঋতু অনুযায়ী ফোটে নানা ফুল ও ফলে ফল-ফসল। কোনরকম হেরফের ছাড়া প্রকৃতিতে এ নিয়ম পালিত হওয়ার ঘুরচাকা একটা কথায় মনে করিয়ে দেয় যে, বিশ্ব নিয়ন্ত্রা এক ও অদ্বিতীয়।
আভিধানিক অর্থ: তাওহিদ শব্দটি আরবি। এটি মাসদার। ওয়াহিদ বা আহাদ শব্দ হতে উৎপন্ন। সুতরাং তাওহিদ শব্দের অর্থ এক করা, এক হওয়া, একক হওয়া। দ্বিতীয় না থাকা, একক বলে স্বীকার করা ইত্যাদি। তাওহিদ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো ‘Monothism'
পারিভাষিক সংজ্ঞা: ইসলামী চিন্তাবিদগণ বিভিন্নভাবে তাওহিদকে সংজ্ঞায়িত করেছেন। নিম্নে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংজ্ঞা উপস্থাপন করা হলো:
সুফিবাদীদের মতে, “ বিশ্বজুড়ে আল্লাহর একত্বের উপলব্ধি হলো তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদ। “
দার্শনিকদের মতে, তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদ হলো সত্তা ও গুণগত দিক দিয়ে আল্লাহর একত্ববাদ।”
কালামশাস্ত্রবিদগণ তাওহিদের সংজ্ঞায় বলেন, “ আল্লাহতায়ালা সত্তাগত দিক থেকে একক, এ বিশ্বাসের নামই তাওহিদ। “
আবুল হাসান আল আশআরীর মতে, “ তাওহিদ হলো এ ঘোষণা দেয়া যে, আল্লাহ একক এবং একমাত্র সত্তা।”
চলবে------------
আভিধানিক অর্থ: তাওহিদ শব্দটি আরবি। এটি মাসদার। ওয়াহিদ বা আহাদ শব্দ হতে উৎপন্ন। সুতরাং তাওহিদ শব্দের অর্থ এক করা, এক হওয়া, একক হওয়া। দ্বিতীয় না থাকা, একক বলে স্বীকার করা ইত্যাদি। তাওহিদ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো ‘Monothism'
পারিভাষিক সংজ্ঞা: ইসলামী চিন্তাবিদগণ বিভিন্নভাবে তাওহিদকে সংজ্ঞায়িত করেছেন। নিম্নে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংজ্ঞা উপস্থাপন করা হলো:
সুফিবাদীদের মতে, “ বিশ্বজুড়ে আল্লাহর একত্বের উপলব্ধি হলো তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদ। “
দার্শনিকদের মতে, তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদ হলো সত্তা ও গুণগত দিক দিয়ে আল্লাহর একত্ববাদ।”
কালামশাস্ত্রবিদগণ তাওহিদের সংজ্ঞায় বলেন, “ আল্লাহতায়ালা সত্তাগত দিক থেকে একক, এ বিশ্বাসের নামই তাওহিদ। “
আবুল হাসান আল আশআরীর মতে, “ তাওহিদ হলো এ ঘোষণা দেয়া যে, আল্লাহ একক এবং একমাত্র সত্তা।”
চলবে------------
লেবেলসমূহ:
কালিমা,
তাফসীরুল কোরান,
দেওবন্দ ইতিহাস
যেসব কারণে রোযা না রাখার অনুমতি আছে
নিম্নোক্ত দশটি কারণে রোযা না রাখার অনুমতি আছে।
1. সফর: সফরে থাকলে রোযা না রেখে পরে কাযা করার বিধান।
2. রোগ: রোগীরা পরে কাযা আদায় করতে পারবে।
3. গর্ভধারণ: এ অবস্থায় রোযা না রাখার অনুমতি আছে।
4. স্তন্যদান। যদি সন্তানের স্তন্য না পাবার আশঙ্খা থাকে তবে রোযা না রাখার অনুমতি আছ।
5. ক্ষুধা তৃষ্ণার প্রাবল্য: জীবন ওষ্ঠাগত হলে রোযা না রাখার অনুমতি আছে।
6. বার্ধক্য ও দুর্বলতা: এ অবস্থায় রোযা না রাখার অনুমতি আছে।
7. জীবন নাশের ভয়: এ অবস্থায় রোযা না রাখার অনুতি আছে।
8. জেহাদের কারণে:
9. বেহুশ অবস্থায়:
10. মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটলে।
আরো জানতে ক্লিক করুন
1. সফর: সফরে থাকলে রোযা না রেখে পরে কাযা করার বিধান।
2. রোগ: রোগীরা পরে কাযা আদায় করতে পারবে।
3. গর্ভধারণ: এ অবস্থায় রোযা না রাখার অনুমতি আছে।
4. স্তন্যদান। যদি সন্তানের স্তন্য না পাবার আশঙ্খা থাকে তবে রোযা না রাখার অনুমতি আছ।
5. ক্ষুধা তৃষ্ণার প্রাবল্য: জীবন ওষ্ঠাগত হলে রোযা না রাখার অনুমতি আছে।
6. বার্ধক্য ও দুর্বলতা: এ অবস্থায় রোযা না রাখার অনুমতি আছে।
7. জীবন নাশের ভয়: এ অবস্থায় রোযা না রাখার অনুতি আছে।
8. জেহাদের কারণে:
9. বেহুশ অবস্থায়:
10. মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটলে।
আরো জানতে ক্লিক করুন
লেবেলসমূহ:
কালিমা,
তাফসীরুল কোরান,
দেওবন্দ ইতিহাস
সাওম বা রোযা
‘সাওম’ আরবী শব্দ। সাওম বা সিয়াম শব্দের আভিধানিক অর্থ বিরত থাকা, পুড়িয়ে দেওয়া। শরীয়তের পরিভাষায় সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও যৌনচার থেকে বিরত থাকাকে ‘সাওম’ বা রোযা বলা হয়।
ইহা এমন একটি মাস যে মাসে নাযিল হয়েছে সর্বশ্রেষ্ট গন্থ পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ।
বস্তুত, রোযা রাখার রীতি সর্বযুগেই প্রচলিত ছিল। প্রথম নবী আদম আ: থেকে শুরু করে সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ সা: পর্যন্ত সকল নবী - রাসূলই রোযা পালন করেছেন। আল্লামা ইবনে কাসীর রহ: বলেন, ইসলামের প্রাথমিক যুগে তিন দিন রোযা রাখার বিধান ছিল। পরে রোযা ফরজ হলে তা রহিত হয়ে যায়।
হযরত ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: মদীনায় আগমন করে দেখলেন যে, ইয়াহুদিরা আশুরার দিন রোযা পালন করে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন কি ব্যাপার? তোমরা এ দিনে রোযা পালন কর কেন? তারা বলল, এটি অতি উত্তম দিন। এ দিনে আল্লাহ তায়ালা বনী িইসরাইলকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করেছেন। তাই মুসা আ: এ দিনে রোযা রাখতেন। এ কথা শুনে রাসূল সা: বলেন, আমি তোমাদের অপেক্ষা মুসা আ: এর অধিক নিকটবর্তী। তারপর তিনি এ দিন রোযা রাখেন এবং সকলকে রোযা রাখার নির্দেশ দেন। (শামী- 2য় খন্ড, পৃ: 95)
এ হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় হযরত মুসা: আ:, হযরত ঈসা আ: এবং তাদের অনুসারীগণ রোযা পালন করতেন। তবে তাদের সাথে আমাদের রোযার পার্থক্য বিদ্যমান। (চলবে)
ইহা এমন একটি মাস যে মাসে নাযিল হয়েছে সর্বশ্রেষ্ট গন্থ পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ।
বস্তুত, রোযা রাখার রীতি সর্বযুগেই প্রচলিত ছিল। প্রথম নবী আদম আ: থেকে শুরু করে সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ সা: পর্যন্ত সকল নবী - রাসূলই রোযা পালন করেছেন। আল্লামা ইবনে কাসীর রহ: বলেন, ইসলামের প্রাথমিক যুগে তিন দিন রোযা রাখার বিধান ছিল। পরে রোযা ফরজ হলে তা রহিত হয়ে যায়।
হযরত ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: মদীনায় আগমন করে দেখলেন যে, ইয়াহুদিরা আশুরার দিন রোযা পালন করে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন কি ব্যাপার? তোমরা এ দিনে রোযা পালন কর কেন? তারা বলল, এটি অতি উত্তম দিন। এ দিনে আল্লাহ তায়ালা বনী িইসরাইলকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করেছেন। তাই মুসা আ: এ দিনে রোযা রাখতেন। এ কথা শুনে রাসূল সা: বলেন, আমি তোমাদের অপেক্ষা মুসা আ: এর অধিক নিকটবর্তী। তারপর তিনি এ দিন রোযা রাখেন এবং সকলকে রোযা রাখার নির্দেশ দেন। (শামী- 2য় খন্ড, পৃ: 95)
এ হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় হযরত মুসা: আ:, হযরত ঈসা আ: এবং তাদের অনুসারীগণ রোযা পালন করতেন। তবে তাদের সাথে আমাদের রোযার পার্থক্য বিদ্যমান। (চলবে)
লেবেলসমূহ:
কালিমা,
তাফসীরুল কোরান,
দেওবন্দ ইতিহাস
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)