cilck

– সাধারণভাবে কোন কিছুর প্রতি ইচ্ছা বা দৃষ্টি নিক্ষেপ করা। ইত্যাদি
পারিভাষিক অর্থ
– শরহে বেকায়া গ্রন্থকারের মতে- নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্থান যিয়ারত করার নামই হজ্জ।
– কামূসুল ফিকহী গ্রন্থপ্রণেতার মতে- মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কার্যাবলীর মাধ্যমে সম্মানিত বায়তুল্লাহ যিয়ারতের সংকল্প করার নামই হজ্জ।
– ইমাম রাগেব ইস্পাহানী রহ.-এর মতে- সুনির্দিষ্ট কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে কাবা ঘরের ইচ্ছা পোষণ করাকে হজ্জ বলা হয়।
– ঐধুু সবধহং সধশরহম ঃযব ঢ়রষমৎরসধমব ঃড় সধপপধ.
মোটকথা আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের জন্য জিলহজ্জ মাসের ৮ই জিলহজ্জ থেকে ১২ই জিলহজ্জ তারিখ পর্যন্ত পবিত্র কাবা ঘর তাওয়াফ, সাফা মারাওয়া সাঈ, আরাফাহ, মিনা মোজদালিফায় অবস্থান, শয়তানকে পাথর মারাসহ নির্ধারিত কাজসমুহ সম্পাদন করাকে হজ্জ বলে।
পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে, নিশ্চয়ই মানবজাতির জন্য প্রথম যে ঘর নির্মিত হয় তা বাক্কায় (মক্কায়) অবস্থিত। কাবা ঘর পবিত্র এবং সারা জাহানের জন্য পথ প্রদর্শক। এতে রয়েছে সুস্পষ্ট নিদর্শনসমুহ, যার একটি হচ্ছে মাকামে ইবরাহীম। কাবা ঘরে যে প্রবেশ করেছে সে নিরাপদ। [সুরা আল ইমরান -৯৭] মানবজাতির মধ্যে যাদের সামর্থ আছে তাদের জন্য অবশ্যই কর্তব্য হচ্ছে আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করা। কিন্তু সামর্থ থাকা সত্বেও যারা তা আদায় করে না, তারা জেনে রাখুক যে, আল্লাহ তামাম জগতের প্রতিপালক, তিনি কারো কাছে মুখাপেক্ষী নন। অন্যত্র এরশাদ হচ্ছে, তোমরা আল্লাহর জন্য হজ্জ ও ওমরাহ পূর্ণ করো। বুখারি শরীফে প্রিয় নবী সা. এরশাদ করেছেন, হজ্জ ফরয হওয়া সত্বেও তা আদায় না করে যে মৃত্যু বরণ করে, সে মুসলমান হয়ে মরল কিনা সে ব্যাপারে আমি সন্ধিহান। অপর এক হাদীসে আছে তার মৃত্যু ইহুদি নাসারাদের মৃত্যুর মতই হতে পারে।
রাসূল সা. আরো ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি হজ্জের ইচ্ছা করবে, সে যেন তাড়াতাড়ি আদায় করে নেয়।
উল্লেখিত আয়াতে কারীমা এবং হাদীস শরীফে হজ্জ সম্পর্কে মহান আল্লাহর রাসূল যা বলেছেন, জ্ঞানীদের জন্য হজ্জের গুরুত্ব অনুধাবনে তা-ই যথেষ্ট নয় কি?
দুঃখজনক যে, আমাদের দেশে অনেক সম্পদশালী মুসলমান আছেন তাদের উপর বহু পূর্বেই হজ্জ ফরজ হয়েছে। তারা বিভিন্ন অজুহাতে যেমন ছেলে-মেয়ের বিয়ে-শাদী, বাড়ি-ঘর সম্পন্ন করা, ব্যবসা-বাণিজ্য গুছিয়ে নেয়া ইত্যাদি দেখিয়ে হজ্জ আদায়ে গড়িমসি করে থাকেন। অনেক আবার বৃদ্ধ বয়সে হজ্জ করার আশায় থাকেন। অনেকেই বলেন হজ্জ ফরজ হয়েছে কিন্তু বয়সতো হয়নি। চুল দাড়ি পাক ধরুক তারপর হজ্জ করতে যাব। অনেকেই বলেন বাবা-মার আগে হজ্জ আদায় হয়না। দুর্ভাগ্য যে, তাদের অনেকেই এ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। আবার অনেকেই আর্থিক দৈন্যতা ও শারীরিক অক্ষমতা দেখা দেয়। ফলে তারা হজ্জ আদায়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরয ইবাদত ও নেয়ামত থেকে মাহরুম হয়ে যায়। তাই সামর্থবান মুসলমান ভাই-বোনদের প্রতি আহ্বান, সকল প্রকার চিন্তাভাবনা ও গড়িমসি পরিহার করে যাদের উপর হজ্জ ফরয হয়েছে তারা বিলম্ব না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হজ্জ আদায় করুন। কারণ কার মৃত্যু কখন এসে যায় বলা যায়না। অনেকেই হয়ত ভাবেন আমি হজ্জে গেলে সংসার কিভাবে চলবে। এটা এক ধরনের গুমরাহী। আপনার অনুপস্থিতিতেও সংসার চলবে, কারণ রিযিকের মালিক আল্লাহ। এক সময় আপনার সংসার সমাজ সবি চলবে আপনিই থাকবেন না। যারা হজ্জ করতে যায় তারা আল্লাহ তাআলার খাস মেহমান আর আল্লাহর মেহমানের সংসার আল্লাহ তাআলা দেখাসোনার দায়িত্ব নিবেন। আর যে ব্যক্তি হজ্জ আদায় করবে তার সম্পদ কখনও কমবে না; বরং আরো বরকতময় হবে।
হজ্জ ও ওমরার ফযীলত
হজ্জ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম। কারণ, হজ্জের মধ্যে যেমন সম্পদের প্রয়োজন তেমনি শক্তিরও প্রয়োজন। হজ্জ একটি আর্থিক এবং শারীরিক ইবাদত। মাকবুল হজ্জ আদায়কারীর পুরস্কার জান্নাত।
* তিরমিযি শরীফের হাদীসে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা. বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, তোমরা সামর্থ হওয়ার সাথে সাথে হজ্জ ও ওমরাহ আদায় করে নাও। কেননা স্বর্ণকার ও কর্মকার যেমন স্বর্ণ ও রৌপ্য ও লৌহকে পুড়িয়ে-পিটিয়ে ময়লা ও ভেজাল থেকে মুক্ত করেন, ঠিক তেমনি হজ্জ ও ওমরাহ মানুষের দারিদ্রতা ও গুনাহসমুহকে বিদূরিত করে দেয়।
* সুরা হজ্বের ২৭ নং আয়াতে উল্লেখ আছে- লোকদের মধ্যে হজ্জের ঘোষণা করে দিন, তারা পদব্রজে এবং সর্বপ্রকার দুর্বল উটনীতে চড়ে দূর-দূরান্ত থেকে (হজ্জের উদ্দেশ্যে) আপনার কাছে এসে হাজির হয়।
* আল্লাহর জন্য হজ্জ আদায়কারী সদ্য ভূমিষ্ট শিশুর ন্যায় নিষ্পাপ। [বুখারি ও মুসলিম শরীফ]
* হজ্জ ওমরাহ আদায়কারীর গুনাহ ও দারিদ্রতা এমনভাবে দুরিভুত হয়, লোহা ও স্বর্ণের ময়লা যেমনভাবে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। হজ্জযাত্রীগণ আল্লাহর মেহমান, তাদের সকল দুআ ও প্রার্থনা আল্লাহ কবুল করেন। [ইবনে মাজাহ]
* হজ্জ আদায়কারী কখনো গরীব হয়না। [ত্বাবরানী]
* হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সা. এরশাদ করেছেন, “হে মানব সমাজ! আল্লাহ তোমাদের উপর হজ্জ ফরজ করেছেন; সুতরাং তোমরা হজ্জব্রত পালন কর।
পবিত্র কুরআন শরীফের আটটি সূরার মোট পায়ত্রিশখানা আয়াতে হজ্জ ও ওমরা সম্পর্কীয় বর্ণনা এসেছে।
যার উপর হজ্জ ফরজ এবং যার উপর ফরজ নয়
– মুসলমান হওয়া: কেননা অমুসলিমদের উপর হজ্জ ফরজ নয়।
– স্বাধীন হওয়া: দাস- দাসিদের উপর হজ্জ ফরজ নয়। কেননা তারা স্বীয় ইচ্ছার প্রতি সামর্থবান নয়।
– বালেগ হওয়া: কেননা নাবালেগ, অপ্রাপ্তবয়স্কদের ওপর হজ্জ ফরয নয়।
– সুস্থ হওয়া: প্রতিবন্ধী, দুর্বল, যানবাহনে আরোহণে অক্ষম, মস্তিস্ক বিকৃতদের ব্যক্তির ওপর হজ্জ ফরয নয়।
– দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন হওয়া: কেননা অন্ধ ব্যক্তির উপর হজ্জ ফরয নয়।
– পাথেয় থাকা: হজ্জকারীর সম্পদের পরিমাণ ততটুকু হতে হবে, যাতে আসা যাওয়ার সমস্ত খরচের পর বাড়ি ফিরে আসা পর্যন্ত পরিবার, পরিজনের জন্য প্রয়োজনীয় খরচ বহন করতে পারে।
– মহিলার সাথে স্বামী বা মাহরাম থাকা: যদি হজকারীনী তার বাড়ি থেকে কাবা ঘরের দূরত্ব ৪৮ মাইল বা এর চেয়ে বেশি হয়, তাহলে তার সাথে স্বামী বা মুহাররম (বিবাহবন্ধন হারাম এমন পুরুষ) থাকতে হবে।
– যানবাহনের সুবিধা থাকা: কেননা যানবাহনের সুবিধা না থাকলে হজ্জ ফরয নয়।
– জ্ঞানবান হওয়া: কেননা পাগলের উপর হজ্জ ফরজ নয়
– কয়েদি না হওয়া: কারাবন্দির ওপর হজ্জ ফরয নয়। এমনকি তাদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি প্রেরণ করাও জরুরী নয়।
– যদি কারও নিকট এতটুকু পাথেয় থাকে যার দ্বারা মক্কা শরীফের যাতায়াতের ব্যয় নির্বাহ হতে পারে, কিন্তু মদীনা শরীফ গমনের মত টাকা পয়সা না থাকে তবে তার উপরও হজ্জ ফরজ।
হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্তাবলী
১. মুসলমান হওয়া
২. শারীরিকভাবে সুস্থ হওয়া এবং আর্থিক সামর্থ থাকা।
৩. বুদ্ধিমান ও বালেগ তথা প্রাপ্ত বয়ষ্ক হওয়া।
হজ্জের প্রকার
হজ্জ তিন প্রকার যথাঃ
(১) তামাত্তো, (২) ক্বিরান, (৩) ইফরাদ।
১. হজ্জে তামাত্তো : আভিধানিক অর্থ-
– উপভোগ করা, উপস্থিত ফায়দা লাভ করা, উপকার লাভ করা।
পারিভাষিক অর্থ-
* শরহে বেকায়া গ্রন্থকারের মতে- তামাত্তো হলো, হজ্জ পালনেচ্ছুক ব্যক্তি হজ্জের মাসে প্রথমে মীকাত হতে ওমরা পালনের জন্য ইহরাম বাধবে, তারপর তাওয়াফ করবে, সাফা- মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে সায়ী করবে, হলক অথবা কসর করবে।
৮ই জিলহজ্জ তারিখে মিনা যাওয়ার প্রাক্কালে হজ্জের নিয়তে পুনরায় ইহরাম বাঁধবে। এই জন্য এই নিয়মে ইহরাম দীর্ঘায়িত হয় না। হাজী সাহেবানদের জন্য এই নিয়ম সহজ ও অপেক্ষাকৃত আরামদায়ক। তাই বাংলাদেশের অধিকাংশ হাজী সাহেবগণ তামাত্তো হজ্জ করে থাকেন। তামাত্তো হজ্জকারীদের সংখ্যা সর্বাধিক হয়ে থাকে। মহিলাদের জন্য তামাত্তো হজ্জই বেশি সমীচীন। তামাত্তো হজ্জের জন্য কুরবানি করা ওয়াজিব। তামাত্তো হজ্জে প্রথমে ওমরার নিয়ত করতে হবে।
হজ্জের নিয়ত
ইয়া আল্লাহ! আমি তামাত্তু হজ্জের নিয়ত করছি, আমার জন্য তা সহজ করে দিন ও কবুল করুন।
ওমরাহর নিয়ত
ইয়া আল্লাহ! আমি তামাত্তো হজ্জ আদায়ের নিমিত্তে প্রথমে ওমরাহ আদায়ের নিয়ত করছি, আমার জন্য তা সহজ করে দিন ও কবুল করুন। এরপর ৮ জিলহজ্জ মক্কা মোকাররমা থেকে ইহরাম বেধে হজ্জের নিয়ত করতে হবে।
(২) হজ্জে ক্বিরান : আভিধানিক অর্থ-
– মিলানো, সংযুক্ত করা
– দুটি বস্তুকে একত্রিত করা, সাথী হওয়া।
পারিভাষিক অর্থ-
ওমরাহ ও হজ্জ এক সাথে আদায়ের জন্য ইহরাম বেঁধে প্রথমে ওমরাহ পালন করে ইহরাম না খুলে একই ইহরামে হজ্জ সমাপন করাকে “হজ্জে ক্বিরান ” বলে।
এ নিয়মে ওমরার তাওয়াফ এবং সায়ী করে হজ্জের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। যারা হজ্জের কাছাকাছি সময়ে মক্কা শরীফে আসবে তাদের জন্য ক্বিরান হজ্জের নিয়ত করা উত্তম এবং সওয়াবও অধিক। ক্বিরান হজ্জকারীদের সংখ্যা কম হয়ে থাকে। ক্বিরান হজ্জের জন্য কুরবানি করা ওয়াজিব। ক্বিরান হজ্জের জন্য ওমরাহ ও হজ্জের নিয়ত এক সাথে করতে হবে।
(৩) হজ্জে ইফরাদ :
আভিধানিক অর্থ-
– একাকি, একক, বিজোড়
– ঝড়ষরঃধৎু, টহরঃ, ঁহরঃবফ, অষড়হ
পারিভাষিক অর্থ-
শুধুমাত্র ইহরাম বেঁধে হজ্জ সমাপন করাকে “হজ্জে ইফরাদ” বলে। এতে কোন ওমরাহ করতে হয় না। ইফরাদ হজ্জকারীদের সংখ্যা কম হয়ে থাকে। ইফরাদ হজ্জের জন্য কুরবানি ওয়াজিব নয়, তবে করা মুস্তাহাব। ইফরাদ হজ্জের জন্য শুধুমাত্র হজ্জের নিয়ত করতে হবে।
হজ্জের ফরজ তিনটি
১- ইহরাম বাঁধা ,
২- আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা।
৩- তাওয়াফে যিয়ারত করা।
(১) ইহরাম বাঁধা: গুনাহ বর্জন, নেক আমলের প্রতিশ্র“তি এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে হজ্জব্রত পালনের নিয়ত এবং তালবিয়া পাঠের নামই ইহরাম।
(২) আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা: ৯ই জিলহজ্জ দ্বিপ্রহর থেকে ঐদিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত যে কোন সময় এক মূহুর্তের জন্য হলেও আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা।
(৩) তাওয়াফে যিয়ারত: ১০ জিলহজ্জের ভোর থেকে ১২ই জিলহজ্জের সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বাইতুল্লাহ শরীফের তাওয়াফ করা।
হজ্জের ওয়াজিব সমুহ
হজ্জের ওয়াজিব ৬টি যথা-
১- ৯ই জিলহজ্জ দিবাগত রাত্রে আরাফার ময়দান হতে মিনায় ফিরার পথে মুজদালিফায় রাত্রি যাপন এবং সেখানে মাগরিব ও এশার নামায একই সাথে আদায় করা।
২- সাফা-মারওয়া পাহাড় সাঈ করা।
৩- ১০, ১১, ১২ইং জিলহজ্জ শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা।
৪- ক্বেরান ও তামাত্তো হাজীদের জন্য কুরবানি করা।
৫- কুরবানির পরে মাথা মুন্ডানো বা চুল ছোট করা।
৬- মিকাতের বাইরে অবস্থানকারীদের জন্য বিদায়ী তাওয়াফ করা।
হজ্জের সুন্নত সমুহ
১- মীকাতের বাইরে থেকে আগমনকারীদের জন্য তাওয়াফে কুদুম করা,
২- তাওয়াফ হাজরে আসওয়াদ (কাল পাথর) থেকে শুরু করা।
৩- যে তাওয়াফের সাঈ আছে সেই তাওয়াফে রমল এবং ইযতিবা করা।
৪- সাফা-মারাওয়ার মধ্যে যে দুটো সবুজ বাতি আছে তার মধ্যবর্তী স্থান দৌড়ে অতিক্রম করা। তবে মহিলাদের জন্য প্রযোয্য নয়
৫- মক্কায় ৭ই জিলহজ্জ তারিখে আরাফাতে ৯ই জিলহজ্জ তারিখে এবং মিনায় ১২ই জিলহজ্জ তারিখে ইমামের খুতবাহ শোনা।
৬- ৮ই জিলহজ্জ তারিখে দিবাগত রাত মিনায় কাটানো।
৭- সূর্যোদয়ের কিছুক্ষণ পূর্বে মুজদালিফা থেকে মিনায় রওয়ানা হওয়া।
৮- ১০ই জিলহজ্জ এবং ১১ই জিলহজ্জ তারিখের রাত এবং ১২ই জিলহজ্জ তারিখেও মিনায় থাকলে ১৩ই জিলহজ্জ তারিখ দিবাগত রাতও সেখানে কাটানো।
ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ
(১) খোশবু ব্যবহার করা (২) সেলাই করা কাপড় পরিধান করা (স্ত্রী লোক সেলাই করা কাপড় পড়তে পারবে) (৩) চুল পশম বা নখ কাটা বা উপড়ে ফেলা। (৪) চুল দাড়িতে খেজাব লাগানো। (৫) বৃক্ষ, ঘাস, গাছপালা কাটা বা ছেঁড়া। (৬) সুগন্ধি টুথপেষ্ট ব্যবহার করা। (৭) মাথা ও মুখ ঢাকা (৮) পশু-পাখি শিকার করা বা সাহায্য করা। (৯) কীটপতঙ্গ, মশা, মাছি, উকুন বা যে কোন প্রাণী হত্যা করা। (১০) সর্বপ্রকার যৌনচারে জড়িয়ে পড়া। (১১) ঝগড়া বিবাদ করা (১২) কোন গুনাহর কাজ করা। (১৩) মোজা পরিধান করা। (১৪) পুরুষের মুখমন্ডল ও মাথা ঢেকে রাখা। (১৫) জাফরান মিশ্রিত কোন কাপড় পরিধান করা। (১৬) পাগড়ী পরিধান করা।
পুরুষদের জন্য ইহরাম অবস্থায় এমন জুতা ব্যবহার করা, যার দ্বারা পায়ের পাতার মাজখানের গিরাটি ঢেকে যায়। তা পূর্ণ ১ দিন বা রাত্রি পরিধান করলে কুরবানি ওয়াজিব হয়ে যাবে। যারা প্রথমে মদীনা শরীফে যাবেন তাদের মদীনা শরীফ থেকে মক্কা শরীফে আসার পথে ইহরাম বাধলেই চলবে, কিন্তু মক্কায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে ইহরাম বাধার পর মদীনায় যাওয়ার ইচ্ছা হলে ইহরাম খুলা যাবেনা। যদি খুলে তবে দম ওয়াজিব হবে।
হজ্জের তালবিয়া
উচ্চারণ : লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা-শারীকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নাল হাম্দা ওয়ান্ নিয়ামাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা-শারীকা লাক।
অর্থ : আমি হাযির হে আল্লাহ! আমি হাযির, আমি হাযির। আপনার কোন শরীক নেয়, আমি হাযির। নিশ্চয় সকল প্রশংসা ও নিয়ামত আপনারই, আর সকল সাম্রাজ্য আপনারই, আপনার কোন শরীক নেই।
দুআ কবুলের স্থানসমুহ
(১) মাতাফ তথা তাওয়াফের জায়গায়, (২) মুলতাজাম বা কাবা ঘরের দরজা ও হাজরে আসওয়াদের মধ্যবর্তী স্থান, (৩) মীযাবে রহমত বা কাবা শরীফের ছাদের পানি যে স্থান দিয়া নিচে পরে সে স্থান (হাতিমের মধ্যে), (৪) যমযম কুয়ার কাছে, (৫) মাকামে ইবরাহীম অর্থাৎ হযরত ইবরাহীম আ. এর পদচিহৃ যেখানে সংরক্ষিত আছে তার পিছনে, (৬) সাফা-মারওয়া পাহাড়ের উপর, (৭) রোকনে ইয়ামানি ও হাজরে আসওয়াদের মধ্যবর্তী স্থানে, (৮) মিনার ময়দানে (৯) আরাফাতের ময়দানে, (১০) জাবালে রহমতে, (১১) মুজদালিফার ময়দানে, (১২) জাবালে নূর যেখানে পবিত্র কুরআন নাযিল হয়েছিল, (১৩) জাবালে সওর যেখানে প্রিয় নবী সা. হযরত আবু বকর রা.কে নিয়ে অবস্থান করেছিলেন, (১৪) জাবালে ওহুদ যেখানে ওহুদের যুদ্ধ হয়েছিল এবং প্রিয় নবীজি সা. এর দন্ত মোবারক শহীদ হয়েছিল, (১৫) দারে আরকাম যেখানে হযরত ওমর রা. ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, (১৬) জান্নাতুল বাকী ও জান্নাতুল মোয়াল্লা যে কবরস্থানদ্বয়ে প্রিয় নবীজির সাহাবায়ে কেরাম, আওলাদে পাক, আযওয়াজে মুতাহ্হারা , শুহাদায়ে কেরাম শুয়ে আছেন ও অন্যান্য পবিত্র স্থান সমুহ। সবিশেষে দুআ করি আল্লাহ যেন আমাদেরকে হজ্জে মাবরুর দান করেন। আমীন।
লেখক : প্রাবন্ধিক, তরুণ আলেম,
www.facebook.com/hafej.minhaz.1
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন